ঈদুল আজহার আগে-পরে যাতায়াতের ১৫ দিনে সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে ৪১৫টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২৭ জন, আহত হয়েছেন ১১৯৪ জন। সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৫ দিনে সড়কে ৩৭৯টি দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ও ১১৮২ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে আরও ১২ জনের, নিখোঁজ রয়েছেন ৬ জন। সবমিলিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা দাঁড়ায় ৪১৫টি, যেখানে ৪২৭ জন নিহত এবং ১১৯৪ জন আহত হন।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদের যাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে হলে অন্তত চার দিন সরকারি ছুটি থাকা দরকার। এর পাশাপাশি যাতায়াত ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। গণপরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, ছোট যানবাহন মহাসড়ক থেকে সরাতে হবে এবং প্রশিক্ষিত চালক নিয়োগ ও যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিত করতে হবে। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও আইনের সুশাসনও জরুরি।
তিনি আরও জানান, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দেশের সড়ক-মহাসড়কের অনেক জায়গায় বৃষ্টির কারণে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বেপরোয়া যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়েছে। ঈদের পর অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে বিরামহীনভাবে যানবাহন চালানোর কারণে। অধিকাংশ দুর্ঘটনায় দেখা গেছে, যানবাহন খাদে পড়ে গেছে বা দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লেগেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এবারও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য এবং যাত্রী হয়রানি চরমে পৌঁছায়। বাসের ছাদ, ট্রেনের ছাদ, খোলা ট্রাক বা পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছে। ঈদের সময় এই চিত্র বদলাতে হলে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।