র‍্যাবের ছদ্মবেশে উত্তরায় চাঞ্চল্যকর ছিনতাই, কোটি টাকা নিয়ে চম্পট

New-Project-25.jpg

র‍্যাবের ছদ্মবেশে উত্তরায় চাঞ্চল্যকর ছিনতাই। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

রাজধানীর উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টার দিকে ঘটে গেল এক রীতিমতো সিনেমার মতো ছিনতাই। কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে এসে ছিনতাইকারীরা নিজেদের র‍্যাব সদস্য পরিচয় দেয়। তাদের গায়ে ছিল র‍্যাবের পোশাকও। এরপর অস্ত্রের মুখে নগদ এজেন্টের চার কর্মীকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীরা জানান, নগদ ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়নের বাসা থেকে ডিস্ট্রিবিউশন অফিসে টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। হেঁটে পাঁচ মিনিটের পথ হলেও দুইটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হচ্ছিল নিরাপত্তার জন্য। হঠাৎ একটি হায়েস মাইক্রোবাস এসে তাদের গতিরোধ করে। ছিনতাইকারীরা তিন জনকে অস্ত্র দেখিয়ে গাড়িতে তোলে। ওই সময় ওমর হোসেন নামে এক কর্মী অন্য একটি ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে পালাতে সক্ষম হন।

পুলিশ জানায়, ছিনতাইকারীরা জিম্মিদের উত্তরা-১৭ সেক্টরে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। জব্দ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ ও ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের নাম্বার। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার না হলেও নগদের চার কর্মীকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি অনেকটাই পরিকল্পিত। এক মোটরসাইকেলে ১ কোটি ৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা থাকায় বিষয়টি সন্দেহজনক। এটি পূর্বপরিকল্পিত ছিনতাই হয়ে থাকতে পারে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে—কেন এত টাকা কর্মীরা বাসা থেকে এত সকালে অফিসে আনছিলেন?

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ছিনতাইকারীরা জিম্মিদের মারধর করেছে। প্রশ্ন উঠছে—ডিস্ট্রিবিউটরের বাসায় এত বড় অঙ্কের টাকা কেন রাখা হয়েছিল? অপরাধীদের শনাক্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ঘটনায় মামলা হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এটি কোনো সাধারণ ছিনতাই নয়—এর পেছনে বড় ধরনের পরিকল্পনা ও ভেতরের তথ্য পাচারকারী কেউ জড়িত থাকতে পারে। নগদের ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়ন ও তার পার্টনার তারিকুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। শহরের মাঝে এভাবে র‍্যাব পরিচয় দিয়ে এমন বড় ছিনতাইয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

তদন্তের অগ্রগতি জানতে এখন সবার চোখ পুলিশি তদন্ত ও সিসিটিভি বিশ্লেষণের ওপর।

Leave a Reply

scroll to top