বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক দারুণ খবর। সম্প্রতি কাতার জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২১ বছর বয়সী তরুণ ফুটবলার নাবিল ইরফান। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইরান ও উজবেকিস্তানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য কাতারের স্প্যানিশ কোচ হুলেন লোপেতগুই তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এটি বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা, যেখানে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার অন্য দেশের জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন।
নাবিল ইরফান বর্তমানে কাতারের শীর্ষ লিগ স্টার্স লিগের ক্লাব আল-ওয়াকরাহ এসসিতে খেলছেন। ২০২১ সাল থেকে এই ক্লাবের জার্সিতে তার ফুটবল প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটছে। মূলত রাইট ব্যাক হিসেবে খেললেও, তাকে প্রায়শই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবেও দেখা যায়। তার বহুমুখী খেলার দক্ষতা এবং মাঠের পারফরম্যান্সই তাকে কাতার অনূর্ধ্ব-২৩ দলে সুযোগ করে দিয়েছিল, যেখানে তিনি নজর কেড়েছেন কোচিং স্টাফদের। এবার সেই পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল মঞ্চে তার ডাক পড়ল।
কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নাবিল ইরফানকে জাতীয় দলে ডাকার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রচার করেছে। এই প্রচারণায় স্পষ্টতই বোঝা যায়, কাতার ফুটবল কর্তৃপক্ষ নাবিলের ওপর কতটা আস্থা রাখছে এবং তাকে নিয়ে তাদের প্রত্যাশা কতখানি। ২১ বছর বয়সী এই তরুণ ফুটবলারকে ঘিরে কাতার ও বাংলাদেশের ফুটবল মহলে এখন ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশের অনেক ফুটবলার বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া লিগে খেলছেন। এদের মধ্যে হামজা চৌধুরী, শামিত সোম, ফাহামিদুল ইসলামের মতো খেলোয়াড়রা তো ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বিদেশে বেড়ে ওঠা আরও অনেক প্রতিভাবান প্রবাসী ফুটবলারকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। নাবিল ইরফানের কাতার জাতীয় দলে ডাক পাওয়া নিঃসন্দেহে এই প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং অন্যান্য প্রবাসী বাংলাদেশি ফুটবলারদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
নাবিল ইরফান কাতার জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তাকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। বাংলাদেশের পাশাপাশি কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও তাকে নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। অনেকেই এই ঘটনাকে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন এবং আশা করছেন, নাবিল তার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য অর্জন করবেন। তার এই অর্জন বাংলাদেশের ফুটবলকে বিশ্ব মঞ্চে পরিচিতি পেতে সহায়তা করবে বলেও অনেকে মনে করছেন।