পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই শতভাগ আত্মবিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “প্রতিবছর যেভাবে ভালোভাবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করছে।” তিনি আরও জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায়কারীদের জন্য জায়নামাজ আনার প্রয়োজন হবে না।
এসময় সম্ভাব্য বৃষ্টির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন যেন বৃষ্টি না হয়। আর যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের প্রস্তুতির কোনো কমতি নেই। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সারাদেশে কাজ করছেন এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা ছুটিতেও যাননি।”
ঈদের সময়ে চুরি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, রাজধানীর নিরাপত্তায় ৫০০ পেট্রল টিম কাজ করবে, যারা অলিগলিতেও নজরদারি চালাবে। তিনি এই ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, “কোনো তথ্য থাকলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানাবেন। ছোটখাটো ঘটনাও যেন না ঘটে, সে জন্য আমরা কাজ করছি।” আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, “এবার নিরাপত্তা নিয়ে আমি ১০০ ভাগ কনফিডেন্ট আছি।”
কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করতে পারছেন না—এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “কোনো ঘটনায় যদি মামলা না নেওয়া হয়, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইতিমধ্যে সিলেট বিভাগে অনলাইন জিডি (সাধারণ ডায়েরি) চালু করা হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে জিডি ও মামলা যেন অনলাইনে নেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি মহাখালীতে যাত্রী হয়রানির তথ্য তুলে ধরা একজন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমরা তদন্ত করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আপনারাও মাঠে যান, আপনাদের নজরে কিছু আসলে আমাদের জানাবেন। আপনাদের সহযোগিতা আমাদের দরকার। সত্যি ঘটনা আপনারা তুলে ধরবেন। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ হলে পার্শ্ববর্তী দেশ এটার সুযোগ নেয়। তারা এটাকে ফলাও করে লেখে। আপনাদের একটি সুনাম আছে। আপনারা সব সময় সত্য নিউজ লেখেন। এটা আপনারা বজায় রাখেন।”
অপরাধী গ্রেপ্তারের কিছুদিন পরেই আবারও বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটা তো আর পুলিশের হাতে না। বিষয়টা আদালতের বিষয়। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, দুজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছাড়া পাওয়ার পর আবারও অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এমন যদি কেউ অবৈধ কাজে জড়িয়ে যায়, তাহলে তাকেও ছাড়া হবে না, পুঁটিমাছ কিংবা রুই কাতলা হোক কাউকে ছাড় নেই। আইন সবার জন্য সমান।”
