পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাড়ির টানে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে, যা স্টেশন এলাকায় এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে। তবে, সবচেয়ে স্বস্তির খবর হলো, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি। সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় যাত্রীদের মধ্যে দেখা গেছে সন্তুষ্টি।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, গত দু-তিনদিনের তুলনায় আজ যাত্রীদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও, মানুষের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। স্টেশনে প্রবেশের জন্য যাত্রীরা বাঁশের তৈরি ব্যারিকেড লাইনে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। টিকিট প্রদর্শনের জন্য তিন স্তরের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। প্রথম ধাপে স্টেশনে প্রবেশ মুখে, দ্বিতীয় ধাপে আবারও এবং সবশেষ প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় টিকিট যাচাই করা হচ্ছে। এতে করে টিকিটবিহীন যাত্রীদের প্রবেশ ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
কথা হয় ট্রেনযাত্রী মাহমুদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, “অফিস ছুটি হয়েছে আরও দুইদিন আগে, কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় যেতে পারিনি। পরে অনেক কষ্টে আজকের টিকিট ম্যানেজ করে অবশেষে বাড়িতে রওনা হচ্ছি।” তার চোখে-মুখে ছিল বাড়ি ফেরার আনন্দ।
আরিফুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, “অনেকদিন পরে বাড়িতে যাচ্ছি। পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাবো, এটাই অনেক আনন্দের।”
মেহেদী হাসান নামে একজন গার্মেন্টস পণ্যের দোকানের কর্মচারী বলেন, “ঈদের আগ মুহূর্তে বেচাকেনা ভালো হয়, তাই মালিক আগে থেকে ছুটি দেননি। তাই আজকে বাড়ি যাচ্ছি।” তার কথাতেও বাড়ি ফেরার আকুলতা স্পষ্ট।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, “যাত্রীদের ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। তিন স্তরের টিকিট চেকিং ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আমরা প্রস্তুত। ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত স্বস্তির। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ট্রেন শিডিউল বিপর্যয় নেই।”
এদিন যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। চুরি-ছিনতাইসহ যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তারা স্টেশন এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। সব মিলিয়ে, এবারের ঈদযাত্রা অনেকটাই নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।