আরাফার দিন দোয়া করার সর্বোত্তম সময় কখন?

New-Project-2025-06-05T132240.867.png

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ। পবিত্র হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ আরাফার দিন। এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য এই দিনটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। হাজীরা এদিন আরাফার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ ও দোয়ায় মশগুল থাকেন। এই দিনের দোয়া কবুলের বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

দোয়ার সর্বোত্তম সময়
আরাফার দিনে দোয়ার সর্বোত্তম সময় হলো জোহরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এই সময়টিতে হাজিরা আরাফার ময়দানে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠভাবে প্রার্থনা করেন। কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া পাঠের পাশাপাশি তারা হাত উঠিয়ে বিনয় ও ভক্তিসহকারে নিজেদের প্রয়োজন ও চাওয়াগুলো মহান আল্লাহর কাছে পেশ করেন। হাজিদের এই দোয়ার আমল সূর্যাস্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

দোয়া করার পদ্ধতি
এদিন দোয়া শুরু করার আগে আল্লাহর প্রশংসা ও তার গুণাবলির বর্ণনা করা এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা উত্তম। এরপর নিজের প্রয়োজন, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মনের ইচ্ছামতো দোয়া করা যায়। নবী করিম (সা.)-এর আরাফার দিনের দোয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করা সুন্নাত, কারণ সেসব দোয়ায় রয়েছে অনেক কল্যাণ ও বরকত।

আরাফার ময়দানের অন্যতম দোয়া হলো: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আ’লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।’

গুরুত্বপূর্ণ আমলসমূহ

১. মিনায় ফজরের নামাজ আদায়: ৯ জিলহজ্ব তারিখে মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে একনিষ্ঠ তাওবার সঙ্গে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওনা হওয়া।

২. আরাফাতে অবস্থান: সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার আগে থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের অন্যতম ফরজ কাজ।

৩. গোসল ও নামাজের প্রস্তুতি: খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ জোহরের ওয়াক্তের আগেই সেরে নেওয়া উচিত। সূর্য ঢলে যাওয়ার পর জোহর নামাজের পূর্বে উকূফে আরাফার উদ্দেশে গোসল করা সুন্নাত।

৪. একত্রে নামাজ আদায়: নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে নামিরাসহ আরাফাতের ময়দানের যে কোনো জায়গায় অবস্থান করা এবং নিজ নিজ জায়গায় নামাজ আদায় করা। অর্থাৎ জোহরের সময় জোহর এবং আসরের ওয়াক্তে আসরের নামাজ আদায় করে দোয়া-ইসতেগফার করা।

উল্লেখ্য, মসজিদে নামিরায় জোহর ও আসরের জামাত এক আজানে দুই ইকামতে একত্রে আদায় করা গেলেও তাবুতে বা অন্য কোনো স্থানে একত্রে আদায় না করে আলাদা আলাদা আদায় করা উচিত।

৫. বেশি বেশি দোয়া: আরাফার দিনে দু’হাত উত্তোলন করে বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-সহ পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণ যে দোয়া পাঠ করেছেন, তা পাঠ করা।

৬. কোরআন তিলাওয়াত ও দরুদ: কোরআন তিলাওয়াত ও রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরূদ প্রেরণ হলো আরাফাতের ময়দানের সর্বোত্তম আমল।

৭. সিজদায় দোয়া: সম্ভব হলে আরাফাতের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সিজদায় দোয়া ও ইসতেগফারের মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা।

৮. মুজদালিফার দিকে রওয়ানা: সূর্যাস্তের পর সঙ্গে সঙ্গে মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওয়ানা হওয়া।

এই আমলগুলো সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ আরাফার দিনের বিশেষ বরকত লাভ করতে পারে এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে।

Leave a Reply

scroll to top