যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কড়াকড়ি, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় ১২ দেশ

New-Project-61.jpg

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ফের বিতর্কের ঝড় তুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের দৌড়ঝাঁপ শুরু করার প্রেক্ষাপটে তিনি এক নির্বাহী আদেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। নিরাপত্তার অজুহাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, বিশ্লেষকরা একে মুসলিম ও আফ্রিকান প্রধান দেশগুলোর বিরুদ্ধে বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

স্থানীয় সময় বুধবার তিনি এই আদেশে সই করেন, যা আগামী সোমবার (৯ জুন ২০২৫) থেকে কার্যকর হবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নিষিদ্ধ দেশগুলোর তালিকা

এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন। এছাড়াও বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলার ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেছেন কলোরাডোর একটি ইহুদি সমাবেশে পেট্রলবোমা হামলার কথা। সেখানে এক মিসরীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। যদিও তালিকাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মিসরের নাম নেই, যা এই নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বিধিনিষেধ

এই একই দিনে ট্রাম্প হার্ভার্ডসহ মার্কিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রেও নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেন। নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় ভিসা দেওয়া হবে কিনা তা যাচাই করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিতর্ক

এই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে ট্রাম্পের ২০১৭ সালের বিতর্কিত মুসলিম নিষেধাজ্ঞার (Muslim Ban) তুলনা করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞায় থাকা অধিকাংশ দেশই মুসলিম প্রধান হওয়ায় অনেকেই এটিকে ধর্মীয় বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বহুত্ববাদী মূল্যবোধের পরিপন্থী।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, কিছু ব্যতিক্রম থাকবে—যেমন বৈধ গ্রিন কার্ডধারী, কূটনৈতিক ভিসাধারী, জরুরি চিকিৎসাসেবার জন্য আগতরা এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিরা। তবে এসব ব্যতিক্রম সীমিত পরিসরে কার্যকর হবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ প্রভাব
এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হয়েছে। অভিবাসী অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এটি বিদেশি নাগরিকদের অপরাধীর মতো বিবেচনা করে এবং বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্প আবারও অভিবাসন ইস্যুকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।

Leave a Reply

scroll to top