আগামী শনিবার পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু কেনা, পরিবার-পরিজনের খরচ এবং উপহার সামগ্রী কিনতে ইতিমধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দেশবাসী। এসব খরচ মেটাতে বড় অঙ্কের অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের প্রথম তিন দিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার, যা টাকায় দাঁড়ায় প্রায় ৭,৪২৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)। ঈদ উপলক্ষে রেমিট্যান্সের এই বড় প্রবাহ দেশের অর্থনীতিতে চাঙাভাব সৃষ্টি করেছে, বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলের বাজারগুলোতে।
ঈদকে ঘিরেই এই উত্থান
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার এবং পরিবারে খরচের জন্য এই সময়টিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এ সময় নগদ অর্থের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যেও গতি আসে।
গত মে মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি ডলার, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স। ২০২৪ সালের মার্চে আসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, যা ছিল ঈদুল ফিতরের আগে। গত বছরের মে মাসের তুলনায় এবারে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩২ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকে জুনের ৩ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছে ২,৮১১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২,১৬৬ কোটি ডলার।
সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণোদনা ও সহজ ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার কারণে প্রবাসীরা এখন অনেক বেশি বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন। হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বাড়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহে এ ধরনের উত্থান সম্ভব হয়েছে বলেও মত বিশ্লেষকদের।
এই প্রবাহ ঈদের বাজারে শুধু আনন্দই যোগ করছে না, বরং দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।