চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (RCB)-এর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢোকা ছিল ফ্রি— এই ঘোষণার পর নজিরবিহীন ভিড়ের চাপে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। একটি সরু গেট দিয়ে ঢোকার সময় পদদলিত হয়ে প্রাণ হারালেন অন্তত ১১ জন, আহত অন্তত ৪৭।
পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, হাজার হাজার মানুষ স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। আইপিএলে ১৮ বছরের প্রতীক্ষার পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া আরসিবির এই জয় রাজ্যজুড়ে আবেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই আবেগ থেকেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান দেখতে মরিয়া হয়ে পড়েছিলেন সাধারণ মানুষ।
প্রথমে এই অনুষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট পাস ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ পাস পাননি। পরে হঠাৎ ঘোষণা করা হয়, যে কেউ চাইলে স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারবেন — আর তাতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি।
গেট খুলতেই হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। সরু প্রবেশপথ দিয়ে চারদিক থেকে লোক ঢুকতে শুরু করলে ভিড়ের চাপে শুরু হয় পদদলনের ঘটনা।
প্রথমে কিছু মানুষ চাপে পড়ে আহত হন। কিন্তু ভিড় বেড়ে যাওয়ায় ব্যারিকেড ভেঙে যায়। ব্যারিকেডের কাছাকাছি যারা ছিলেন, তারা মাটিতে পড়ে যান এবং পেছন থেকে আসা মানুষের পায়ে পিষ্ট হন।
ঘটনার পর পুলিশের তৎপরতায় আহত এবং অজ্ঞান মানুষদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত এবং আহতদের ছাড়াও অনেক দর্শক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
আরসিবি দল বিধানসৌধায় মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেখানেও জড়ো হয় বিশাল ভিড়। ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা পড়বে বলে জানানো হয়েছে।
ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “ভিড় নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম, ৫ হাজারের বেশি কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। লাখো মানুষ এসে পড়েছিল। অনুষ্ঠান মাত্র ১০ মিনিটেই শেষ করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। এটি যুব সম্প্রদায়ের ভিড়, লাঠিচার্জ করাও সম্ভব নয়।”
এদিকে এই ঘটনার কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন পুরো পরিকল্পনা ও জননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মদন লাল। তিনি বলেন, এই ঘটনার জন্য আরসিবি এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ১০০ কোটির ক্ষতিপূরণ মামলা করা উচিত। বিসিসিআইও দায় এড়াতে পারে না।