বাঙালির ঈদ উৎসব ঘিরে সদ্য সমাপ্ত মে মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের ৩০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসেবে)।
এই রেমিট্যান্সের মধ্যে শুধু শেষ পাঁচ দিনেই এসেছে ৪৫ কোটি ডলার বা ৩৩৪০ কোটি টাকা, যা আগের মাসের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ে মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২৫ কোটি ডলারের কিছু বেশি। গড়ে প্রতিদিন এসেছে ৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত (১১ মাসে) প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন মোট ২ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে পাঠানো ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলারের তুলনায় ৬১৩ কোটি ডলার বা ২৮.৭ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্সে এই প্রবৃদ্ধি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ১ জুনের তথ্য অনুযায়ী, গ্রস রিজার্ভ বর্তমানে প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার। যদিও আকু (ACU) পরিশোধের পর নিট রিজার্ভ কিছুটা কমে বর্তমানে রয়েছে ২০.৫০ বিলিয়ন ডলার, যা আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে থাকা ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি।
রেমিট্যান্স প্রবাহের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে উন্নতি হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল। ডলারের বাজারভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হলেও বর্তমানে তা ১২২ থেকে ১২৩ টাকার মধ্যে স্থির রয়েছে। ব্যবসায়ীরা এখন সহজেই বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছেন।
এদিকে, সরকার পতনের পর থেকে অর্থপাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নজরদারি জোরদার হয়েছে। ইতোমধ্যে একাধিক পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, এবং কিছু ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, অর্থপাচারে জড়িত থাকার সন্দেহে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ১১টি যৌথ তদন্ত চলছে। এর আওতায় ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ সংযুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল ২৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলার।