বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট আজ সোমবার (২ জুন) উপস্থাপন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই বাজেট হবে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংসদের বাইরে উপস্থাপিত বাজেট, যা বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচারিত হবে। এছাড়া, সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনগুলোকে বিটিভির ফিড নিয়ে একই সময়ে বাজেট বক্তৃতা প্রচারের অনুরোধ করা হয়েছে।
নতুন বাজেটের আকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো একটি অর্থবছরের বাজেট আগের বছরের তুলনায় ছোট হচ্ছে ।
বাজেটের মূল দিকনির্দেশনা:
- মোট বাজেটের আকার: ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা।
- রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা: ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংগ্রহ করবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা।
- বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি): ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
- অ-উন্নয়ন ব্যয়: ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
- বাজেট ঘাটতি: ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ।
- ঘাটতি পূরণে ঋণ: দেশীয় উৎস থেকে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে।
বাজেটের অগ্রাধিকার খাতসমূহ
অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ভাতা ও উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতা প্রচারিত হবে বিকেল ৩টায়, যা পূর্বে নির্ধারিত ৪টা থেকে এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে ।
বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচারিত হবে, এবং অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলগুলো বিটিভির ফিড নিয়ে একই সময়ে প্রচার করবে।
সংসদ না থাকায় এবারের বাজেটে আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। তবে বাজেট ঘোষণার পর নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চেয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।
এই বাজেটের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিচ্ছে। তবে সংসদীয় বিতর্কের অনুপস্থিতিতে বাজেটের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।