বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে গতকাল (২৯ মে) রাত থেকে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর সঙ্গে আমাবস্যার প্রভাবে জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি স্বাভাবিকের তুলনায় ২ থেকে ৩ ফুট বেড়ে গেছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্র, দুবলার চর, কটকা, কচিখালী, শেলার চরসহ বিভিন্ন এলাকা ২ থেকে ৩ ফুট পানির নিচে চলে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বন্যপ্রাণীদের ঝুঁকি বাড়লেও বন বিভাগের তৎপরতায় একটি হরিণকে নদীতে ভেসে যাওয়ার সময় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, “নিম্নচাপ ও আমাবস্যার প্রভাবে করমজলসহ বিভিন্ন চর প্লাবিত হয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় শেলার চর এলাকা থেকে ভেসে যাওয়া একটি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বনের অভ্যন্তরে যেসব উঁচু টিলা রয়েছে, সেখানে বন্যপ্রাণীরা আশ্রয় নিতে পারবে।”
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, উপকূলে আগামী দুই থেকে তিন দিন এমন আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। মোংলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, “নিম্নচাপের কারণে বাগেরহাট জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।”
অন্যদিকে, মোংলা বন্দরের কার্যক্রম এখনো স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি জাহাজগুলোর পণ্য বোঝাই, খালাস ও পরিবহন কার্যক্রমে এখনো কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে এই প্লাবন পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের আশঙ্কার বাস্তব প্রতিফলন বলেও মনে করছেন পরিবেশবিদরা। তারা বলছেন, সাগরের উপর্যুপরি নিম্নচাপ ও বৃষ্টিপাত উপকূলীয় জীববৈচিত্র্যের ওপর বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।