‘দায়িত্ব পালনে বাধা এলে জনগণকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার’

New-Project-52.png

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত দু’দিন ধরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগ নিয়ে যে জল্পনা-কল্পনা চলছিল, তা আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভা শেষে কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না।

একইসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যদি “পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে” সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয়, তাহলে সরকার “সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

আজ শনিবার (২৪ মে) একনেক বৈঠক শেষেই উপদেষ্টা পরিষদের একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়, তাতে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারের “স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচার প্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত তিনটি প্রধান দায়িত্ব—নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার—নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় যে, এই দায়িত্ব পালনে “বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবি দাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে,” তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদ মনে করে, দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার কাজ এগিয়ে নিতে এবং ভবিষ্যতে স্বৈরাচারের আগমন চিরতরে প্রতিহত করতে একটি “বৃহত্তর ঐক্য” প্রয়োজন। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

বিবৃতির শেষাংশে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, “শত বাধার মধ্যেও গোষ্ঠীস্বার্থকে উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার তার ওপর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করে।” তবে পুনরায় সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, “সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচার প্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

এই বিবৃতি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং প্রধান উপদেষ্টার অবস্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Leave a Reply

scroll to top