সারা দেশে কয়েকদিন ধরেই থেমে থেমে বৃষ্টি চলছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই বৃষ্টিপাত আরও তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আগামী তিনদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই টানা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে অধিদপ্তর। শনিবার (২৪ মে) এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ জানান, ২৭ মে’র দিকে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
প্রথম দফা পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ থেকে শুরু করে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের ছয়টি বিভাগ—ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট—এর কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক স্থানে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানানো হয়।
রোববার (২৫ মে) থেকে এই বৃষ্টির পরিমাণ ও বিস্তৃতি আরও বাড়বে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এই সময় দেশের তাপমাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আসবে—দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে।
সোমবার (২৬ মে) থেকে রংপুর বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। একই সঙ্গে রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগেও দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে, যা নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি করতে পারে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল এবং ঢাকায় বৃষ্টির প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাবে। আবহাওয়ার অবনতি হতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা আবার সামান্য বাড়বে, যদিও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
বুধবার (২৮ মে) বৃষ্টি আরও ব্যাপক আকার ধারণ করবে। ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। এসব অঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাঁচ দিনের পূর্বাভাস বলছে, সপ্তাহের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমবে। তবে এর আগ পর্যন্ত জনজীবনে এর প্রভাব স্পষ্টভাবে অনুভূত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, যানজট এবং নানা রকম জনদুর্ভোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে নদী ও খালপাড়ে বসবাসকারীদের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া বজ্রপাতের আশঙ্কায় খোলা জায়গা ও উঁচু স্থানে অবস্থান না করার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার, সঙ্গে ছাতা বা রেইনকোট রাখার এবং আবহাওয়ার নিয়মিত আপডেট অনুসরণ করার অনুরোধ করা হয়েছে।