জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। শুক্রবার (২৩ মে) সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “গত রাতটি ছিল জুলাই বিদ্রোহের পর থেকে অন্যতম কঠিন রাত।”
তাসনিম জারা বলেন, “রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ক্ষুদ্র স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও পারস্পরিক অবিশ্বাস আমাদের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলছে। স্বল্পমেয়াদি হিসাব-নিকাশের জন্য এমন একটি জাতির স্বপ্ন আমরা ধ্বংস হতে দিতে পারি না, যারা স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এটা দোষারোপের সময় নয়, বরং আত্মসমালোচনার সময়। ইতিহাস আমাদের শেখায়— যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়, তারা প্রায়ই বিভাজন ও মেরুকরণকে ব্যবহার করে পুরোনো শাসনব্যবস্থাকে নতুন মুখোশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। আমাদের উচিত হবে দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের বিপ্লবের প্রতি দায়বদ্ধ থাকা।”
পোস্টের শেষ অংশে তিনি লেখেন, “এই মুহূর্তটি যেন বিভেদের নয়, বরং ঐক্যের দিকে একটি মোড়বদলের প্রেরণা হয়ে ওঠে। আমাদের সংযমী হতে হবে, সংলাপে আসতে হবে এবং ঐক্য ধরে রাখতে হবে— কারণ এই বিপ্লব ছিল জনগণের, তাদের জন্যই আমাদের লড়াই।”
তাসনিম জারার এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে দেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে উদারতা, সংলাপ ও জাতীয় ঐক্যের বার্তা।
গতকাল রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি তথ্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন তোলে। গুঞ্জন ছিল—অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে এ সংক্রান্ত পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সবাই এক ধরনের উদ্বেগ ও ধোঁয়াশায় পড়ে যান।
তবে এখন পর্যন্ত ড. ইউনূস কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে এ ধরনের খবর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হতে পারে, যার লক্ষ্য সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ও স্থিতিশীলতা প্রশ্নবিদ্ধ করা।