ঈদের আগেই আসছে নতুন নকশার টাকা, নেই শেখ মুজিবের ছবি

New-Project-3-10.jpg

ঈদের আগেই আসছে নতুন নকশার টাকা

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাজারে আসছে ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নতুন নকশার নোট। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই এসব নোট ছাপার কাজ প্রায় শেষের পথে, এবং ঈদের আগেই সীমিত পরিসরে নতুন নোট ছাড়া হবে। তবে নতুন এ নোটগুলোর বিশেষ দিক হলো, এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকছে না।

জানা গেছে, এবারের নতুন নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে পূর্ববর্তী নকশা এবং যুক্ত করা হয়েছে জুলাই মাসের ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান সম্পর্কিত গ্রাফিতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, “ঈদের আগেই বাজারে নতুন নোট ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। ছাপার কাজ প্রায় শেষ, তবে কোন তারিখে কোন মূল্যমানের নোট বাজারে আসবে, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।”

নতুন টাকা হস্তান্তর হবে আগামী সপ্তাহে

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও জানান, গাজীপুরের দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টাকশাল) থেকে ২০ টাকার নোট প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হবে আগামী সপ্তাহে। তার পরের সপ্তাহে হস্তান্তর করা হবে ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট।

ঈদের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ অন্যান্য শাখায় নতুন নোট সরবরাহের পর তা বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে এবার নতুন নোটের চাহিদা অনুযায়ী ছাপা কিছুটা কম হচ্ছে, ফলে বাজারে নতুন নোটের সরবরাহ সীমিত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সাধারণত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতিবছরই বাজারে নতুন নোট ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বঙ্গবন্ধুর ছবি যুক্ত ছাপার তারিখ সংক্রান্ত কিছু প্রশাসনিক ও কারিগরি জটিলতার কারণে গত ঈদুল ফিতরে নতুন নোট ছাড়েনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই এবারের ঈদকে ঘিরে নতুন নোটের আগমন জনসাধারণের মধ্যে বাড়তি কৌতূহল ও আগ্রহ তৈরি করেছে।

জুলাই আন্দোলনের পর থেকেই আলোচনায় শেখ মুজিব নোট

শেখ মুজিবের ছবিসংবলিত নোট নিয়ে বিতর্কের জেরে চলতি বছরের ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনায় সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দিয়ে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে ব্যাংকের শাখাগুলোতে গচ্ছিত থাকা নতুন নোটগুলোও বিনিময়ের বদলে সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে বাজারে নতুন নোটের সঞ্চালন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় এবং ক্রমেই পুরনো ও ছেঁড়াফাটা নোটের চলাচল বেড়ে যায়।

জানা গেছে, নতুন নকশার নোট ছাপাতে সাধারণত এক থেকে দেড় বছর সময় লেগে থাকে। আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর গত ডিসেম্বরেই নতুন নোট ছাপানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যারই বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে চলতি মে মাসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ বাজারে তারল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ঈদের কেনাকাটায় স্বস্তি এনে দেবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে নতুন নোটের ডিজাইন ও বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকায় তা রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

Leave a Reply

scroll to top