ঈদের আগে বেতন-ভাতা না দেওয়া অমানবিক ও শ্রমিকবিরোধী

ঈদ বোনাস, কর্মচারীর বেতন, শ্রমিক অধিকার, ঈদের বেতন, মানবিকতা, প্রতিষ্ঠানিক অবহেলা, বাংলাদেশ
মুহাম্মাদ নূরে আলম

ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের লাখো শ্রমজীবী ও বেতনের উপর নির্ভরশীল কর্মচারীরা অপেক্ষা করেন বোনাস ও বেতন পাওয়ার জন্য। কিন্তু প্রতি বছরই দেখা যায়, অনেক প্রতিষ্ঠান ঈদের ছুটি শুরুর আগপর্যন্ত তাদের কর্মচারীদের ন্যায্য বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধ করে না। এতে পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটানোর পরিবর্তে হতাশা ও চাপা কান্না নিয়ে ঈদ কাটে অসংখ্য মানুষের।

ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধ না করা শুধু অমানবিক নয়, এটি এক ধরনের আর্থিক নিপীড়নও,

বলছেন শ্রম অধিকার কর্মী ও গবেষক রাশেদ জামান। তার ভাষ্য, “এটি আমাদের শ্রম আইন, মানবিকতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ—সব কিছুরই পরিপন্থী।”

শ্রম আইন অনুযায়ী, উৎসবের কমপক্ষে ৫ দিন আগে কর্মীদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বাস্তবে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই নিয়ম মানে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মীরা চাপে পড়ে চুপ থাকেন কিংবা ছুটি কাটিয়ে ফেরার পর দাবি করেন পাওনা।

এদিকে পোশাক শিল্প, গণমাধ্যম/সংবাদ মাধ্যম কোম্পানিসহ বেশ কিছু খাতে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। দেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী খাতে কাজ করা হাজার হাজার শ্রমিক অভিযোগ করছেন, বেতন-বোনাস ঠিক সময়ে না পাওয়ায় তারা ঈদে পরিবারের জন্য ন্যূনতম বাজারটুকু করতেও হিমশিম খেয়েছেন।

সাধারণ মানুষ বলছেন,

ঈদ মানে খুশির দিন। কিন্তু হাতে টাকা না থাকলে সে খুশি থাকে না। আমরা যে কাজ করে খাই, সেই পরিশ্রমের মূল্যও যদি সময়মতো না পাই, তাহলে আর কিসের উৎসব?

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টিকে শুধু আইনের দৃষ্টিতে দেখলে হবে না। এটি মানবিকতা, ন্যায্যতা ও একটি সহানুভূতিশীল সমাজ গঠনের অংশ। তাই সরকারের পাশাপাশি মালিক পক্ষকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।

ঈদের মতো একটি ধর্মীয় ও পারিবারিক উৎসবকে ঘিরে শ্রমজীবী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো কেবল তাদের অধিকার নয়, এটি প্রতিষ্ঠানগুলোর নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব। সময়মতো বেতন ও উৎসব ভাতা প্রদান করা উচিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের, নতুবা ঈদ হয়ে ওঠে শুধুই ক্যালেন্ডারের একটি তারিখ।

মুহাম্মাদ নূরে আলম

মুহাম্মাদ নূরে আলম

মুহাম্মাদ নূরে আলম (Muhammad Noora Alam) একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক ও কনটেন্ট বিশেষজ্ঞ, যিনি পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রিন্ট, অনলাইন এবং ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ঢাকা পোস্ট, নয়াদিগন্ত, বিজনেস মিরর এবং শিরোনাম মিডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমে সাব-এডিটর ও কনটেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এনভিডিয়া ও দুবাই ওয়ান মিলিয়ন প্রমপ্টার্স থেকে জেনারেটিভ এআই ও প্রমপ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সনদপ্রাপ্ত। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পাঠকবান্ধব, প্রাসঙ্গিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রভাব ফেলতে সক্ষম কনটেন্ট তৈরিতে তার দক্ষতা অনন্য। ব্যবসা, প্রযুক্তি, সমাজ ও সমসাময়িক বিষয়ের উপর লেখালেখিতে তার পারদর্শিতা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি ‘স্বপ্নবাজ ফাউন্ডেশন’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘রেঁনেসা ফাউন্ডেশন’-এর মিডিয়া প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।

Leave a Reply

scroll to top