বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, স্থলবন্দর বাণিজ্যে ধস

New-Project-14.png
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি বাংলাদেশি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য ভারতের স্থলবন্ধর দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সরকার। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- রেডিমেড গার্মেন্টস, ফলসহ ফলের রসযুক্ত কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস, প্রসেসড ফুড, তুলা ও তুলা থেকে তৈরি সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি দিয়ে তৈরি উপকরণ এবং কাঠের আসবাব ইত্যাদি।

দেশটির এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে এসব পণ্য শুধু কলকাতা ও মুম্বাইয়ের সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। তবে এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের ফলে পেট্রাপোল ও গোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে।

লোকসানে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা

জানা গেছে, এই দুই স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০টির বেশি ট্রাক পণ্য বোঝাই করে ভারতে প্রবেশ করতো। এর মধ্যে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ১৫টির বেশি ট্রাক ভারতে যেতো, যা এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। এর ফলে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে এই মুহূর্তে স্বাভাবিক বাণিজ্য রয়েছে, তবে এর প্রভাব সেখানেও পরতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঘোজাডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের মতে, বাংলাদেশি পণ্য আমদানি বন্ধ হলে স্থলবন্দরের সঙ্গে যুক্ত পোর্টার, লড়ি চালক, বিভিন্ন লজিস্টিক কোম্পানি ছাড়াও শ্রমিকদের ওপর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পেট্রাপোল ইমপোর্ট এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ কুমার দে গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর ব্যবহার করে সারাদিনে যে গাড়ি ভারতে প্রবেশ করে তার প্রায় ২৫ শতাংশ গাড়ি দেশটির পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে আসে।

প্রদীপ কুমার আরও বলেন, এই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পোশাকসহ বেশ কিছু প্যাকেটজাত খাদ্য সামগ্রী, প্লাস্টিক সামগ্রী ভারতে প্রবেশ করে। এসব পণ্য আমদানি বন্ধ হলে দু’দেশের মধ্যে আর্থিক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

ব্যবসায়ীদের অভিমত

ভারতে প্রবেশের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে কাপড় নিয়ে আসছিলেন লরি চালক মোহাম্মদ আব্দুল হাসান। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞায় আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। কারণ আমাদের মতো মানুষদের বাঁচার মতো অবস্থান তো এই একটা কাজের উপরেই ভরসা করে দাঁড়িয়ে আছে।

ঘোজাডাঙ্গার ব্যবসায়ী সঞ্জীব মন্ডল বলেন, সবার আগে আমার দেশ, আমার দেশের সরকার দেশের প্রয়োজনে যেই সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

তবে রাজৈনতিক মহলের মতে, ভারতের এমন নিষেধাজ্ঞায় স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে বড় ধরনের একটা প্রভাব পড়বে। শুধু তাই নয়, এই সমস্যার প্রভাব বন্দরগুলোর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের ওপর পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

scroll to top