সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ভিডিওটি নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি চলন্ত ট্রেনের জানালা ধরে ঝুলছেন, এরপর তিনি প্ল্যাটফর্মে ধাক্কা খেয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। সবাই ধারণা করেছিলেন, তিনি বেঁচে নেই। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য—তিনি বেঁচে আছেন!
ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান (৪০)। তিনি বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার তালশন গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে ১৮ মে, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায়। বগুড়া থেকে সান্তাহারগামী একটি কমিউটার ট্রেন যখন নশরৎপুর স্টেশনে পৌঁছায়, তখন চলন্ত ট্রেন থেকে মতিউর রহমান নিচে পড়ে যান।
মতিউরের ছেলে আহসান হাবিব জানান, তার বাবা সম্প্রতি মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সজিব হোসেনকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য ৪.৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু কাগজপত্র সংক্রান্ত জটিলতায় সজিবের বিদেশ যাত্রা বিলম্ব হয়। এরপর সজিব তার বাবাকে মতিউরের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে যান।
হাবিবের অভিযোগ, ওই ঘটনার জেরে ফেরার পথে সজিবের ছোট ভাই রাকিব এবং তার শ্যালকেরা ট্রেনে মতিউরকে মোবাইল চোর বলে অপবাদ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। ট্রেন চলাকালে মতিউর প্রায় ৪-৫ মিনিট জানালা ধরে ঝুলে ছিলেন।
তিনি বলেন, “ট্রেনটি নশরৎপুর স্টেশনে পৌঁছালে প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বাবা নিচে পড়ে যান। আল্লাহর অশেষ রহমতে ট্রেনের চাকা বাবাকে স্পর্শ করেনি। এটি একেবারেই অলৌকিক ঘটনা।”
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ট্রেন থেকে পড়ার পর স্থানীয় কিছু লোক মতিউরকে চোর মনে করে মারধর শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সজিবের পরিবারের একজন সদস্য বলেন, “ট্রেনে কী ঘটেছে তা আমি নিশ্চিত নই। তবে রাকিব এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
এ ঘটনায় মতিউরের পরিবার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।