বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের ইতিহাস গড়েছেন বহু পর্বতারোহী। তবে বাংলাদেশের তরুণ ইকরামুল হক শাকিল যে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন, তা শুধু বাংলাদেশের গর্বই নয়। বরং বিশ্ব পর্বতারোহণের ইতিহাসেও এক ব্যতিক্রমী ও অনন্য মাইলফলক। কারণ, এত অল্প বয়সে এবং সম্পূর্ণ পদযাত্রার মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার দৃষ্টান্ত বিশ্বে বিরল, যা এর আগে দেখাতে পারেনি কেউ। আর বাংলাদেশের হয়ে তো এটি নিঃসন্দেহে প্রথম।
সদ্য এভারেস্ট জয়ী শাকিলের এবারের অভিযান ছিল ‘সি টু সামিট’ শীর্ষক। যেখানে তিনি সবচেয়ে কম সময়ে এবং পদযাত্রায় সর্বোচ্চ পথ পাড়ি দিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন।
আজ সোমবার (১৯ মে) ’Ikramul Hasan Shakil – ইকরামুল হাসান শাকিল’ ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলা মাউন্টেনারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা শম্পা। তিনি জানান, শাকিল এভারেস্ট জয় করে ক্যাম্প ৪-এ ফিরে এসেছেন। সমুদ্র থেকে পদযাত্রা করে প্রায় ১৩শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দ্রুততম সময়ে শিখর স্পর্শ করেছেন। তবে যোগাযোগ সমস্যা থাকায় ঠিক কোন সময়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন বা সঙ্গে কতজন ছিলেন-এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
এর আগে, ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলীয় পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে হেঁটে ১,২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ৯৬ দিনে এভারেস্ট শিখরে পৌঁছেছিলেন। তার সেই রেকর্ড এবার ভেঙেছেন শাকিল, ম্যাকার্টনি-স্নেপের চেয়ে আরও ১০০ কিলোমিটার বেশি পথ পাড়ি দিয়ে এবং প্রায় এক সপ্তাহ কম সময়ে এভারেস্ট জয়ের অনন্য কীর্তি গড়েছেন বাংলাদেশি এই তরুণ।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের ইনানি সৈকত থেকে ‘সি টু সামিট’ অভিযাত্রার সূচনা করেন শাকিল। লক্ষ্য ছিল ৯০ দিনের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছানো। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ ও চ্যালেঞ্জিং পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেন তিনি। অভিযানের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে জয় করেন ২৯,০৩১ ফুট উঁচু এভারেস্ট।