ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তারা দাবি জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের।
রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও ঢাবি শাখার নেতারা বক্তব্য দেন।
ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় বলেন, “৫ আগস্টের ঘটনার পর ভাবিনি আবার রক্ত ঝরবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে উপাচার্য ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।”
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, “সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রশাসন নীরব। এর দায় কেউ এড়াতে পারে না।”
কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “সাম্য শুধু ছাত্রদলের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব। উপাচার্য এখনো একটি বিবৃতি পর্যন্ত দেননি। আমরা চাই তার সম্মানজনক পদত্যাগ। আর যদি ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মীর উপর হামলা হয় এবং সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।”
সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ‘সাম্যের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘ভিসি তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সাম্য হত্যা: তদন্তে ঢাবির ৭ সদস্যের কমিটি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। একইদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন—আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার। সহকারী প্রক্টর শারমীন কবির সদস্য সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) সাচিবিক দায়িত্বে রয়েছেন। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাম্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।