ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজনকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর জানান, এ ঘটনায় মো. তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও মো. পলাশ সরদার (৩০) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের রাজাবাজার ও গ্রীনরোড এলাকা থেকে আটক করা হয়।
ঘটনার শুরু
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চের পাশে বহিরাগত বাইকারের ছুরিকাঘাতে আহত হন সাম্য। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা কালী মন্দিরের পাশে তিন যুবক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাম্যর ওপর হামলা করেন। এতে হামলাকারীরাও আহত হন। তারা একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে দুজনকে আটক করে। এসময় পালিয়ে যান আরেক যুবক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আটক দুজনের পরিচয় ও বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ছাত্রদেলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন সাম্য
নিহত সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন এবং স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানায়। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও চত্বরে মধ্যরাতেও নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
ছাত্রদল এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।