শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ১৭ মে

New-Project-34-2.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

মাগুরার আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আগামী ১৭ মে, শনিবার ঘোষণা করবে আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান আজ মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ তারিখ ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়ে অভিযোগ গঠনের মাত্র ২১ দিনের মাথায় বিচার প্রক্রিয়ার ইতি ঘটতে যাচ্ছে।

আজ সকাল ১১টার দিকে মামলার যুক্তিতর্কের দ্বিতীয় দফা শুনানি সম্পন্ন হয়। এরপর বিচারক রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক চলাকালে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয় এবং পরবর্তীতে কঠোর নিরাপত্তায় তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের দাবি: অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মকুল জানান, এই মামলায় মোট ২৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া সাতটি জব্দ তালিকায় ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন তাদের সাক্ষ্য ও আলামত সত্যায়ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মামলায় তিনটি মেডিকেল সার্টিফিকেট রয়েছে, যেগুলোতে স্বাক্ষর করেছেন পাঁচজন চিকিৎসক। তারা প্রত্যেকে আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে সার্টিফিকেটের স্বপক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন এবং স্বাক্ষর শনাক্ত করেছেন।

“সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা সন্দেহাতীতভাবে আসামি হিটু শেখ-এর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত ২০০৩) এর ধারা ৯(২) অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি,” — বলেন অ্যাডভোকেট মকুল।

ঘটনার পটভূমি

গত ৬ মার্চ, মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় মাত্র আট বছর বয়সী শিশু আছিয়া। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়া হয়, পরে তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। ১৩ মার্চ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সে।

এই পাশবিক ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয় আইনজীবীরা প্রতিবাদে সামিল হন। আইনজীবীরা অভিযুক্তদের জন্য আইনি সহায়তা না দেওয়ার ঘোষণাও দেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি তদন্ত প্রতিবেদন

প্রধান আসামি হিটু শেখ, যিনি আছিয়ার বোনের শ্বশুর, ১৫ মার্চ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার সঙ্গে একাই জড়িত ছিলেন বলে জানান। তবে পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ১৩ এপ্রিল আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

রায়ের দিকে তাকিয়ে দেশ

দেশজুড়ে আলোচিত এই মামলার দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া সবার নজর কেড়েছে। এখন সবার দৃষ্টি ১৭ মে-র রায়ের দিকে, যেখানে নির্যাতনের শিকার শিশুর পরিবারসহ সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছে।

Leave a Reply

scroll to top