মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতা করার পর উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, এবং আমরা এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে প্রস্তুত।” এছাড়া, তিনি কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ।
এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে। তবে, যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হতে এবং বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত হতে হলে উভয় দেশকে একে অপরের প্রতি আস্থা ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
ট্রাম্পের এই প্রতিশ্রুতি আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও উভয় দেশের নেতাদের প্রশংসা করেছেন এবং সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন ।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “য দিও এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি, আমি উভয় মহান দেশের সঙ্গে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে যাচ্ছি। পাশাপাশি, আমি আপনাদের দু’দেশের সঙ্গে কাজ করব যাতে হাজার বছর পর কাশ্মীর ইস্যুতে সমাধানে পৌঁছানো যায়।”
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে প্রায় ৭০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অধিকাংশই ভারতীয় নাগরিক। এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় কাশ্মীরের পহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায়, যাতে ২৬ জন হিন্দু নিহত হন। এরপর, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক চাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়, যদিও তা স্থায়ী হয়নি এবং উভয় দেশ একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে ।
ভারত পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য ভারতকে দায়ী করেছে।
সীমান্তবর্তী শহরগুলোর জনজীবন স্বাভাবিক হচ্ছে
শনিবার গভীর রাতে ভারতের সীমান্তবর্তী শহরগুলোর বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু হয়েছে, যা আগের রাতের ব্ল্যাকআউটের পর একটি ইতিবাচক উন্নতি হিসেবে দেখা যাচ্ছে। পাকিস্তান থেকে আসা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর, বিশেষ করে জম্মু, পাথানকোট ও উদমপুর অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তবে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়, ফলে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ছিল।
বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু হওয়ায়, সীমান্তবর্তী শহরগুলোর জনজীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। তবে, সীমান্তে উত্তেজনা এখনও বিদ্যমান, এবং উভয় দেশ একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করছে।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার গভীর রাতে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের ভিম্বারে সীমিত গোলাগুলি হয়েছে। তবে, এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং অন্য কোথাও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। এই তথ্যটি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীও সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে
এদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনীও সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পাকিস্তান থেকে আসা যে কোনো অনুপ্রবেশ বা হামলার মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশই সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্ব নেতারা উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।