ঢাকাসহ ৮ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত, চলবে কবে পর্যন্ত?

New-Project-4-4.jpg

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েকদিন ধরেই চলমান প্রচণ্ড তাপদাহ আজও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষ করে ঢাকা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা জনজীবনকে চরমভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

রবিবার (১১ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উল্লিখিত জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকাতেও দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে—৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রাজধানী ঢাকায়ও দিনের তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা জনস্বাস্থ্য ও কাজকর্মে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

তাপপ্রবাহের প্রভাবে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়েছে দুপুরের দিকে। শ্রমজীবী মানুষ, বিশেষ করে রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক ও খোলা আকাশের নিচে কাজ করেন এমন ব্যক্তিদের জন্য এই গরম হয়ে উঠেছে দুঃসহ। হাসপাতালগুলোতে হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

দুর্ভোগে জনজীবন

ঢাকার তেজগাঁও এলাকার রিকশাচালক লাল মিয়া বলেন, “গরমে তো শরীর যায় যায় অবস্থা। দুপুরের পর আর রাস্তায় থাকতে পারি না। তবু পেটের দায়ে নামতে হয়।” অন্যদিকে খিলগাঁওয়ের গার্মেন্টকর্মী হাসিনা বেগম জানান, “ফ্যাক্টরিতে ভেন্টিলেশন খুবই খারাপ, গরমে মাথা ঘোরায়, অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।”

আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ভারতের বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলজুড়ে তৈরি হওয়া স্থায়ী লঘুচাপের কারণে বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেছে, ফলে তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন এই অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। ১৪ মে’র পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এই সময় বাইরে অতিরিক্ত ঘোরাঘুরি না করা, দিনে কয়েকবার পানিশূন্যতা দূর করার জন্য ওআরএস সেবন, হালকা পোশাক পরিধান এবং প্রয়োজনে ছাতা বা সানগ্লাস ব্যবহার করার।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও জনসাধারণকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

scroll to top