এখনো স্বপদে জনস্বাস্থ্যের বিতর্কিত কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র দে

ব্রেকিং-নিউজ-4.jpg
মুহাম্মাদ নূরে আলম খান শান্ত , ঢাকা

পতিত সরকারের দোসররা এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে। সরকারি চাকরিজীবী হয়েও আওয়ামী লীগের সুবিধা নিতে ‘বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ’-এর রাজনৈতিক কমিটির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন কিছু বিতর্কিত প্রকৌশলী, যাঁরা এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন।

সরকারি সার্ভিস রুল অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। কোনো রাজনৈতিক দলের মিছিল বা সমাবেশেও তাঁদের যোগ দেওয়া নিষিদ্ধ।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারা অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ নেই। অথচ বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের ১১ জন সদস্যই এই বিধান লঙ্ঘন করেছেন।

এই কমিটির অন্যতম সদস্য বিধান চন্দ্র দে, যিনি গোপালগঞ্জের বাসিন্দা, তিনি তাঁর নিজ জেলার পরিচয়কে ব্যবহার করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রভাব বিস্তার করেছেন। সর্বশেষ তিনি ‘পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন, যেটি নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

সম্প্রতি গত নভেম্বর তিনি গ্রাউন্ড ওয়াটার সার্কেল (ঢাকা)-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব পান।

ফেনী সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ জানায়, ২০২২ সালের জুন মাস থেকে ‘আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন’ প্রকল্পের আওতায় স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালানো হয়। প্রকল্পের আওতায় ২৯,৬৩৩টি টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৫,৩৯৮টি টিউবওয়েলে আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক টিউবওয়েল রয়েছে অত্যধিক ঝুঁকিতে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, লেমুয়া, ফাজিলপুর ছনুয়া ইউনিয়নে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ আরও জানায়, ফেনী সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ১০৮টি ওয়ার্ডে আনুমানিক ৬০-৭০ হাজার গভীর অগভীর টিউবওয়েল রয়েছে, যেগুলোর পানি গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই জরিপের ভিত্তিতে যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে আর্সেনিক-জনিত রোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে।

তবে প্রকল্পের সমস্যা সমাধানে মনোযোগ না দিয়ে, প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র দে নিজের পদোন্নতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, তিনি পদায়নের ক্ষেত্রে অনৈতিক আর্থিক লেনদেনেও জড়িত ছিলেন।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে একাধিকবার তাঁর মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

scroll to top