বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’তে এই বৈঠকটি সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, দেশে চলমান বিরোধীদলের আন্দোলন, সচিবালয় ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এই বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ের শীর্ষে থাকবে।
বৈঠকে যেসব বিষয় গুরুত্ব পেতে পারে
- রাজধানীজুড়ে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
- বিরোধী রাজনৈতিক জোটের ডাকা পরবর্তী কর্মসূচি ও সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া
- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি ও চলমান অবস্থান
- রাজধানীর কিছু এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণার বাস্তবায়ন ও জনগণের প্রতিক্রিয়া
- সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও মেঘালয়-সিলেট সীমান্তে ভারতের কারফিউ ঘোষণার প্রভাব
- ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ
- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এবং বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের উদ্বেগ
বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে নির্বাচনকালীন প্রশাসনিক প্রস্তুতি
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামনের জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারের অবস্থান এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতিও এই বৈঠকে আলোচনায় আসবে। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক চাপ ও স্থানীয়ভাবে বিরোধীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার কী কৌশল নেবে, তা নিয়ে উপদেষ্টারা পরস্পর মতবিনিময় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৈঠকে কারা থাকছেন
বৈঠকে সব উপদেষ্টা ছাড়াও উপস্থিত থাকতে পারেন স্বরাষ্ট্র, তথ্য, জনপ্রশাসন, পররাষ্ট্র ও আইন উপদেষ্টা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরাও বৈঠকে ব্রিফিং দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিং হতে পারে
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। তবে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্তসমূহ জানানো হতে পারে।
বিশ্লেষণ: সংকটের প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদের করণীয় কী?
বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় উপদেষ্টা পরিষদের এই জরুরি বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর টানা কর্মসূচি, রাজপথে সংঘর্ষ, সীমান্তে উত্তেজনা ও প্রশাসনিক কড়াকড়ি – সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এক জটিল মোড়ে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুইটি—একদিকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ধরে রাখা। জনমনে বিরাজমান হতাশা ও উদ্বেগ প্রশমনে কিছু দৃশ্যমান ইতিবাচক পদক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠেছে।
উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠকে যদি একটি সুসমন্বিত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার বিষয়ে অগ্রগতি হয়, তাহলে তা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে সহায়ক হতে পারে। তবে যদি কেবল কঠোর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণেই সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।