বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের রাত্রিকালীন কারফিউ জারি

বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের রাত্রিকালীন কারফিউ জারি

সীমান্ত

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সিলেট সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই কারফিউ ৮ মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে এবং প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে। কারফিউটি মূলত সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে জারি করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ মে) জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের জারি করা আদেশের বরাত দিয়ে হিন্দুস্থান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাত্রিকালীন কারফিউয়ের এই আদেশ দুই মাস বলবৎ থাকবে।

কারফিউয়ের আওতাভুক্ত এলাকা ও সময়সীমা

মেঘালয়ের পূর্ব খাসি হিলস, পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলস এবং পূর্ব জৈন্তিয়া হিলস জেলাগুলোর সীমান্তবর্তী এলাকায় এই কারফিউ জারি করা হয়েছে। পূর্ব খাসি হিলস জেলায় কারফিউ ১ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলসে ২০০ মিটার পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা জুড়ে কার্যকর থাকবে।

কারফিউয়ের উদ্দেশ্য ও নিষেধাজ্ঞা

কারফিউ চলাকালীন সময়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় মানুষের চলাচল, পাঁচজন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত, অস্ত্র বা বিপজ্জনক বস্তু বহন এবং চোরাচালান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং চোরাচালান রোধ করা হচ্ছে।

প্রশাসনের নির্দেশনা ও স্থানীয়দের মতামত

প্রশাসনের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কারফিউ চলাকালীন নিচের কার্যকলাপ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে—পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত, কোনো ধরনের অস্ত্র বা লাঠিসোঁটা বহন, গবাদিপশু ও পণ্য পরিবহন (বিশেষ করে চা পাতা, সুপারি, পানের পাতা, শুকনা মাছ), সীমান্ত পারাপার বা অবৈধ অনুপ্রবেশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত বৃহস্পতিবার সিলেটের তামাবিল সীমান্তে উভয় দেশের যৌথ জরিপ কার্যক্রম চলাকালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধার মুখে পড়ে। স্থানীয় লোকজনের আপত্তিতে জরিপ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনার পরই ভারতীয় প্রশাসন সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অতিরিক্ত পদক্ষেপ

মেঘালয় রাজ্য সরকার সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি বাড়িয়েছে। এছাড়া, আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলাতেও সীমান্তবর্তী এলাকায় রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং নদীতে মাছ ধরা বা নৌকা চালানোর জন্য পূর্বানুমতি প্রয়োজন।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই কারফিউয়ের ফলে সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অবৈধ কার্যকলাপ রোধে এই পদক্ষেপগুলো জরুরি বলে মনে করছে প্রশাসন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই কারফিউ অব্যাহত থাকবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রশাসন পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

scroll to top