দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে শাহবাগে, অন্য রাস্তায় ব্লকেড না দেওয়ার আহ্বান হাসনাতের

New-Project-27-1.jpg

দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে শাহবাগে

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন ছাত্র-জনতা। শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে শুরু হওয়া এই আন্দোলন শনিবার সকাল পর্যন্ত চলমান রয়েছে। তবে রাতভর অবস্থানের পর সকালে উপস্থিতি কিছুটা কমে গেছে। তবুও কয়েকশ শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী সেখানে অবস্থান করছেন এবং “ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ ব্যান”, “আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।আন্দোলনের কারণে শাহবাগ মোড়ের প্রতিটি সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে, ফলে রাজধানীর এই অংশে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

শাহবাগ ছাড়া অন্য রাস্তায় ব্লকেড না দেওয়া আহ্বান হাসনাতের

এদিকে, রাজধানীর শাহবাগ মোড় ছাড়া দেশের অন্য কোনো হাইওয়ে এমনকি রাজধানীর অন্য কোনো সড়ক বন্ধ না করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।  শনিবার ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে আহ্বান জানিয়েছেন হাসনাত। তিনি বলেন, “ঢাকার শাহবাগ ছাড়া ঢাকা বা সারা দেশের হাইওয়েগুলোতে ব্লকেড দেবেন না। জেলাগুলোতে স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত করুন, সমাবেশ করুন। কিন্তু ব্লকেড না। ব্লকেড খুলে দিন”।

হাসনাত তার পোস্টে আরও লেখেন, আজ শনিবার বিকেল ৩টা থেকে শাহবাগে ছাত্র-জনতার গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, সারাদেশের জুলাই স্পটগুলোতে ছাত্র-জনতার গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।

ছাত্র-জনতার তিন দফা দাবিগুলো হলো:

  • আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে।
  • জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।

আন্দোলেনের শুরু

এর আগে শুক্রবার (৯ মে) বিকেল পৌনে ৫টায় শুরু হয় এই আন্দোলন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ের পাশের মঞ্চ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দেওয়ার পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে শাহবাগে এসে অবরোধ শুরু করেন। সারা রাত সেখানে অবস্থান করেন তারা।

রাত ১১টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩টায় শাহবাগে গণজমায়েতের আহ্বান জানান এবং অবস্থান কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দেন।

এই আন্দোলনের পেছনে রয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্মৃতি, যেখানে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। আন্দোলনকারীরা মনে করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা আবার হুমকির মুখে পড়বে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আন্দোলন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তবে, আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের আহ্বান জানিয়ে হাসনাতের ব্লকেড না দেওয়ার অনুরোধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

Leave a Reply

scroll to top