চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪০.৮ ডিগ্রি, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

New-Project-3-3.jpg

তীব্র গরমে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, দুপুর ৩টায় তাপমাত্রা ছিল ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সন্ধ্যায় আরও বেড়ে ৪০.৮ ডিগ্রিতে পৌঁছায়। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৩৭ শতাংশ, যা গরমের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। ৩৮-৩৯.৯ ডিগ্রি হলে মাঝারি এবং ৪০-৪১.৯ ডিগ্রি হলে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৪২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে তা চরম বা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়।

জনজীবনে দূর্ভোগ

তীব্র গরমে চুয়াডাঙ্গার খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। রিকশাচালক মিঠুন মিয়া বলেন, “এই গরমে গাড়ি নিয়ে বের হওয়া যাচ্ছে না। সামনে ঈদ অথচ গরমের কারণে যাত্রী নেই। খুব খারাপ অবস্থা।”

কৃষকরাও এই তাপপ্রবাহে ভুগছেন। আলমডাঙ্গা উপজেলার কৃষক আইনুদ্দিন আল আজাদ জানান, “আমার কয়েক বিঘা জমিতে এখনো ভুট্টা রয়েছে। শ্রমিকদের নিয়ে খেত থেকে ভুট্টা তুলছি। কিন্তু প্রচণ্ড রোদের কারণে গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।”

আবহওয়াবিদরা যা বলছেন

আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, “জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত আবহাওয়া পরিস্থিতি এমনই থাকবে। এর মাঝে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠতে পারে।”

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, চলমান তীব্র তাপদাহে ফল-ফসল রক্ষায় কৃষকদের বেশকিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেও রোগী ও স্বজনদের হাঁসফাঁস অবস্থা দেখা গেছে। তীব্র গরমে রোগীদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ছে। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে গা এলিয়ে দিচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অনেক পথচারী ছাতা মাথায় দিয়ে চলাচল করছেন। এই তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন চরম দুর্ভোগে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

Leave a Reply

scroll to top