জাবি প্রশাসক বদলালেও বদলায়নি আইন বিভাগের দুরবস্থা

New-Project-14-3.jpg

জাবি আইন বিভাগ

জাবি প্রতিনিধি

১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন ও বিচার বিভাগ এখনো নিজস্ব ভবন পায়নি। শিক্ষক সংকট ও অবকাঠামোগত দুর্বলতায় জর্জরিত বিভাগটি চলছে মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষ ও দু’জন স্থায়ী শিক্ষক দিয়ে।

বর্তমানে বিভাগের ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৯ জনই শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন। ফলে পুরো পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ১৭ জন অতিথি শিক্ষকের ওপর নির্ভর করে। একমাত্র শ্রেণিকক্ষটির পাশাপাশি অন্য বিভাগের একটি কক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে পারলেও পাঁচটি ব্যাচের ক্লাস চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ

শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক সংকট বিষয়ে আইন ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলম কাজল বলেন, “আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি একটি স্থায়ী ভবনের। এই প্রাণের দাবিটি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছি এবং প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু আশ্বাস আর কবিতামূলক কিছু কথা ছাড়া আর কিছুই পাইনি। মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষ, দুইজন স্থায়ী শিক্ষক আর ১৭ জন অতিথি শিক্ষকের ওপর নির্ভর করে চলছে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম। মেধার স্বাক্ষর রেখে ও স্বপ্ন নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছি আমরা, অথচ ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও পাইনি। এই হলো আইন বিভাগের ১৪ বছরের ইতিহাস। আমরা প্রশাসনের সদিচ্ছা কামনা করছি।”

এক শিক্ষার্থী বলেন,“আমরা স্বপ্ন নিয়ে আইন ও বিচার বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, জাহাঙ্গীরনগরের মতো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা পাব। কিন্তু বাস্তবতা আমাদের হতাশ করেছে। ১৪ বছরেও বিভাগের নিজস্ব ভবন হয়নি, মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষ, আর স্থায়ী শিক্ষক মাত্র দু’জন। একজন শিক্ষার্থীর সবচেয়ে বড় অধিকার হলো একটি সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ, কিন্তু আমরা প্রতিনিয়তই সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। অতিথি শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করে পাঠদান কোনো স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। প্রশাসনের কাছ থেকে শুধু আশ্বাস পেয়েছি, বাস্তবে পরিবর্তন চোখে পড়েনি। আমরা চাই, আর কোনো ব্যাচ যেন এই দুর্দশার শিকার না হয়। দ্রুত স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ ও ভবন নির্মাণ করে আমাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা হোক।”

দুঃখ প্রকাশ প্রশাসনের

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষক সংকট রয়েছে আইন বিভাগে। দুঃখজনকভাবে সেখানে মাত্র দু’জন স্থায়ী শিক্ষক ও ১৭ জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে, যা উল্টো হওয়া উচিত ছিল। আমরা খুব দ্রুতই শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করব। এছাড়াও, অফিসিয়ালি তাদের একটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও আমরা দুটি অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করেছি। অস্থায়ীভাবে সমস্যার সমাধানের জন্য আগামী ৬ মাসের মধ্যে লেকচার থিয়েটারের একটি ফ্লোর আইন বিভাগকে দেওয়া হবে।”

Leave a Reply

scroll to top