বজ্রপাতের সময় নিজেকে রক্ষা করার সহজ ও কার্যকর উপায়

বজ্রপাতের সময় নিরাপদে থাকার ৬ উপায়

বজ্রপাতের সময় নিরাপদে থাকার উপায়
মুহাম্মাদ নূরে আলম

বজ্রপাতের সময় নিজেকে বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানোর বিষয়ে সবারই সচেতন থাকা উচিত। বজ্রপাতের ফলে ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

বজ্রাঘাতের ফলে পেশিতে ব্যথা, হাড় ভেঙে যাওয়া, হকচকিয়ে যাওয়া, কানে কম শোনা, খিঁচুনি, পুড়ে যাওয়া, আচরণগত পরিবর্তন, চোখের ছানি, এমনকি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এক কথায়, বজ্রাঘাতের শিকার হওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে।

তাই বজ্রপাতের সময় নিজেকে রক্ষা করা এবং সম্ভাব্য ক্ষতি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কিছু জরুরি পরামর্শ রইল:

১. ঘরের ভেতর থাকুন

যখন আকাশে বিজলী চমকাচ্ছে এবং বাজখাঁই শব্দে ঘরদোর কাঁপছে, তখন ঘরের মধ্যে অবস্থান করাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। ঝড় থেমে যাওয়া পর্যন্ত জানালা-দরজা বন্ধ রেখে ঘরের মধ্যে আশ্রয় নিন। কারণ সরাসরি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও বজ্রাঘাত থেকে বাঁচতে ঘরের নিরাপত্তা সবচেয়ে ভালো।

২. গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া ঠিক নয়

ঝড়ের সময় কখনোই গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না। সাধারণ বৃষ্টিপাতের সময় গাছের নিচে বসা আরামদায়ক হতে পারে, কিন্তু বজ্রপাতের সময় তা বিপদজনক। গাছের উপর বাজ পড়লে বিদ্যুৎ দ্রুত গাছের মধ্য দিয়ে মাটিতে প্রবাহিত হয়, যার ফলে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে পারে। অতএব, ঝড় ও বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে আশ্রয় নেয়া থেকে বিরত থাকুন।

৩. খালি পায়ে চলা ঠিক নয়

বজ্রপাতের সময় খালি পায়ে চলা থেকে বিরত থাকুন। অনেকেই বাড়িতে জুতা বা স্যান্ডেল পরতে পছন্দ করেন না, কিন্তু বজ্রপাতের সময় খালি পায়ে চললে মাটিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার সময় তা শরীরে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, অন্তত বজ্রপাতের সময় ঘরে বা বাইরে রাবার সোলের জুতা পরা উচিত।

৪. উঁচু স্থান এড়িয়ে চলুন

বজ্রঝড়ের সময় উঁচু স্থান এড়িয়ে চলুন, কারণ সেসব স্থানই সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। গাছ, খুঁটি বা উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা বজ্রাঘাতের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এই সময়ে নিচু ভবন বা ঘরের মধ্যে থাকা সবচেয়ে নিরাপদ।

৫. গোসল করবেন না

বজ্রপাতের সময় গোসল না করার বিষয়টি অনেকেই মনে করেন পুরনো ধ্যানধারণা, তবে এর সত্যতা রয়েছে। বজ্রপাতের সময় বিদ্যুৎ শকওয়েভ ধাতব পাইপ বা বাথরুমের কলের মধ্যে প্রবাহিত হতে পারে। তাই, বজ্রপাতের সময় গোসল করা বা বাথরুমের কল স্পর্শ করা বিপদজনক হতে পারে। বজ্রপাত থেমে যাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে গোসল করতে হবে।

৬. আবহাওয়ার দিকে নজর রাখুন

যে যেখানেই থাকুন না কেন, আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রাখুন, যাতে বজ্রপাতের আগে এবং পরে সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারেন। নিরাপদে থাকুন, সতর্ক থাকুন।

Leave a Reply

scroll to top