চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে প্রথম পক্ষের ছেলে-মেয়েদের নামে জমি লিখে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী মাজেদ বিশ্বাসের দাফন কাজ আটকে দিয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম ও তার স্বজনরা।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মরাপাগলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে প্রথম স্ত্রী মারা গেলে হামফুল বেগমকে বিয়ে করেন মাজেদ বিশ্বাস। তবে এই দাম্পত্যে কোনো সন্তান হয়নি। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়লে দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও জাব্বার তাকে চিকিৎসার নাম করে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখিয়ে নেন। এরপর গত ১৬ এপ্রিল হামফুল বেগমের নামে তালাকনামা পাঠানো হয়, যা তিনি গ্রহণ করেননি।
এর মধ্যে রোববার (২৭ এপ্রিল) মাজেদ বিশ্বাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হলে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার আত্মীয়রা দাফনে বাধা দেন।
সকাল সাড়ে ৮টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য সালিস বসে। সিদ্ধান্ত হয়, উভয়পক্ষের অংশীদারদের মধ্যে জমি সমবণ্টনের পর লাশ দাফন করা হবে।
এলাকাবাসী মো. সেলিম বলেন, “ছেলেরা বাবাকে চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গিয়ে জমি লিখিয়ে নেয় এবং সৎ মাকে তালাক দেয়। এখন মৃতের দ্বিতীয় স্ত্রী দাফনে বাধা দিয়েছেন। সালিসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
অন্য এক বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, “ভাইয়েরা জমি নিজেদের নামে লিখে নিয়েছে। এখন জমি আইনি মতে ভাগ করে লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
হামফুল বেগমের ভাতিজি অভিযোগ করেন, তার ফুফুকে জোর করে সৎ মেয়ের বাড়িতে রাখার পর পুলিশি সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “হুঁশ না থাকা অবস্থায় তালাক কিভাবে হয়?”
হামফুল বেগম বলেন, “২০ বছর সংসার করেছি, ছেলেদের মানুষ করেছি। এখন তারা সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে। আমি ন্যায্য বিচার চাই।”
অভিযুক্ত দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও জাব্বার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, “সংঘাতের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আপাতত স্থানীয়ভাবে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।”