ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মিরে পর্যটকদের উপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনার জেরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। সেই ঘটনার পর টানা চাররাত ধরে কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটটেছে যার রেশ চলমান রয়েছে এখনো। ভারতের সরকার সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ সরাসরি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। হামলার পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী একটি নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে চীন ও রাশিয়া অংশগ্রহণ করবে।
এর মাঝেই রোববার (২৭ এপ্রিল) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে চীন। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামাবাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে চীন।
কার পাশে থাকবে চীন?
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চীনা মন্ত্রীকে বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। টেলিফোনে আলাপকালে উভয় দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং একতরফা ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জারি থাকবে বলে পরস্পরকে জানান এ দুই নেতা।
চীন ছাড়াও ভাতৃপ্রতীম দেশ সৌদি আরব, ইরান ও মিসরকেও ভারতের সঙ্গে চলা উত্তেজনার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি রক্ষায় ইসলামাবাদের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে বেইজিং। চীন ও পাকিস্তান এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নসহ সবক্ষেত্রে গভীর সম্পর্ক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
গত মঙ্গলবার কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনার পর ভারতের পক্ষ থেকে বুধবার বেশ কিছু কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই হামলার ঘটনায় ভারতের সরকার পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘‘সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে’’ সহায়তার অভিযোগ এনে দেশটির সঙ্গে স্বাক্ষরিত দীর্ঘদিনের সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত এবং উভয় দেশের মধ্যকার প্রধান স্থল সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। পাশাপাশি পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার ও হাইকমিশনে নিযুক্ত কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি।