ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে জাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

New-Project-11-11.jpg

ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে জাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

জাবি প্রতিনিধি

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত হামলার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) বেলা দশটায় পরিবহন চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ সময় নেতাকর্মীদের “জালোরে জালো আগুন জ্বালো, জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো”, “শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি—ছাত্রদলের মূলনীতি”, “ক্ষমতা নয়, জনতা! জনতা! জনতা!”, “আপস নয় সংগ্রাম, সংগ্রাম”, “ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হুশিয়ার সাবধান”, “হই হই রই রই, ছাত্রলীগ গেলি কই”, “ছাত্রলীগের আস্তানা এই বাংলায় হবে না”-প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

আজকের বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর, সদস্য সচিব অসীম আহমেদ অনিক, যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব হিরণসহ প্রায় চার শতাধিক নেতাকর্মী।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, “৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা জোর দাবি জানিয়েছিল—জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচারের। কিন্তু আমরা খুবই আশঙ্কার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিচারের জন্য এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আশঙ্কা করছি, ছাত্রলীগ জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে পুনর্বাসিত হচ্ছে, যার ফলে সাধারণ শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে ছাত্রলীগের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন হাবিব হিরণ বলেন, “আপনারা সবাই জানেন বিগত বছরগুলোতে ক্যাম্পাসগুলো কিভাবে চর দখলের মতো করে দখল করে রেখেছিল। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ করে সেঞ্চুরি করে তা উদযাপন করেছে। সর্বশেষ গত জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগ কিভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার করেছে, তাও আমরা দেখেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ছাত্রলীগের বিচারের ব্যাপারে এখনো কোনো বাস্তব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমনকি আমরা লক্ষ্য করছি, ক্যাম্পাসের আশেপাশে থেকে তারা জাকসু নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুক।”

দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্রবান্ধব ও গণতান্ত্রিক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করবে।”

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে জাকসু নির্বাচন বন্ধ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে এটি আয়োজনের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।

Leave a Reply

scroll to top