গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাওা সমিতির পরিচালক, অবরুদ্ধ কর্মচারীরা

New-Project-57.jpg

গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাওা সমিতির পরিচালক, অবরুদ্ধ কর্মচারীরা

পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামের একটি ভুয়া এনজিওর পরিচালক মো. রহমাতউল্লাহর বিরুদ্ধে গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ঐ সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গ্রাহকরা সংস্থার অফিসে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেন। এ সময় তারা সংস্থার ম্যানেজার মো. বেল্লাল হোসেনসহ অপর ৩ কর্মচারীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এছাড়া অভিযুক্ত পরিচালকের পূর্ব জলাবাড়ি গরুর ফার্ম থেকে টিন খুলে নেওয়া, ফার্মের ৪২টি গরু ও ৮টি ভেড়া নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ

অত্র সংস্থার একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, আরাম কাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির অধিকাংশ গ্রাহকই নিত্যান্ত গরিব ও অসহায় প্রকৃতির। কেউ কেউ এখান থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য সঞ্চয় জমা করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসা বা ছোটখাটো কোন কাজ করার জন্য,কেউবা মাসে মাসে লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় আমানত হিসেবে তাদের জমাকৃত টাকা, গরু ছাগল হাঁস মুরগি বিক্রি করে জমি জমা বিক্রি করে ও বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা জমা রেখেছিলেন অন্য সব ব্যাংক বা এনজিওর থেকে বেশি লভ্যাংশ পাওয়ার আশায়,কেউবা প্রতি মাসে মাসে ডিপিএস হিসেবে ও এখানে টাকা জমা রেখে আসছিলেন।

অএ সংস্থার গ্রাহক নিলুফা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তিনি অত্র সমিতিতে এককালীন ১৪ লক্ষ টাকা জমা রেখেছিলেন প্রতি মাসে মাসে বেশি লভ্যাংশ পাওয়ার আশায়,কিন্তু বেশ কয়েক মাস যাবত লভ্যাংশ টাকা নিয়ে গরি মসি করলে তিনি মূল টাকা ফেরত চান,মুল টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করেও কয়েক মাস যাবত ঘুরাঘুরি করতে থাকেন আমার মত অনেকেই এরকম ঘোরাঘুরি করতে থাকে,অবশেষে আমার আসল ও লাভ সবই গেল এখন আমার পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নেই। রিনা বেগম নামে এক নারী ০৩ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন মেয়ের বিয়েতে খরচ করবেন বলে,তিনি বলেন এখন আর আমার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কোন উপায় নেই,তার মত এরকম শত শত গ্রাহক একই অভিযোগ করেন।

অবরুদ্ধ ম্যানেজারের বক্তব্য

গ্রাহকদের কাছে অবরুদ্ধ অত্র সংস্থার ম্যানেজার মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, বেশ কয়েকদিন যাবৎ আমার সাথে পরিচালকের কোন যোগাযোগ নেই,ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি, শুনেছি পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় গেছেন,আমরা শুধুমাএ বেতনভুক্ত কর্মচারী আমাদের কিছু করার নেই।

কী বলছে প্রশাসন

নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি বলেন, আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি বরিশাল থেকে রেজিস্ট্রেশনকৃত। তারা আমাদের থেকে রেজিস্ট্রেশন না নিয়ে নিয়ম ভঙ্গ করেছেন শুনেছি অত্র সংস্থার পরিচালক বহু গ্রাহকের অগনিত টাকা নিয়ে লাপাওা হয়ে গেছে।

নেছারাবাদ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ বনি আমিন বলেন,আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান নামে ভুয়া এনজিওর পরিচালক গ্রাহকদের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার খবর শুনেছি,কিছু গ্রাহক আমার কাছেও এসেছিল,গ্রাহক কর্তৃক সংস্থার অফিস ও কর্মচারীদের উপর হামলা ও অবরুদ্ধের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।

Leave a Reply

scroll to top