রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে শান্তি চুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তাঁর ভাষায়, অগ্রগতির স্পষ্ট কোনো লক্ষণ না থাকলে এই প্রক্রিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র “কয়েক দিনের মধ্যেই” সরে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
শুক্রবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর রুবিও জানান, “আমরা সপ্তাহ কিংবা মাস ধরে অপেক্ষা করতে পারি না। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আমাদের বুঝতে হবে—চুক্তির সম্ভাবনা আদৌ আছে কি না।”
রুবিও বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চেষ্টায় অনেক সময় ও শক্তি দিয়েছেন, তবে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আরও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে যেগুলো একই রকম মনোযোগ দাবি করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার, ট্রাম্প আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন যে, তিনি আগামী সপ্তাহে ইউক্রেনের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে চান, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে। যদিও ফেব্রুয়ারিতে ওভাল অফিসে জেলেনস্কি, ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বৈঠক কোনো চূড়ান্ত ফলাফল আনতে পারেনি।
প্যারিসে আলোচনার পর রুবিও বলেন, ট্রাম্পের উত্থাপিত শান্তি কাঠামো ইউরোপীয় মিত্রদের কাছ থেকে “উৎসাহজনক প্রতিক্রিয়া” পেয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কার্যালয় আলোচনাকে “গঠনমূলক ও ইতিবাচক” বলে বর্ণনা করেছে।
রুবিও আরও জানান, তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গেও এই শান্তি প্রস্তাবের কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে নিরাপত্তা গ্যারান্টির মতো সংবেদনশীল বিষয় থাকলেও, এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি এমন একটি নিরাপত্তা কাঠামো তৈরির, যা সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। তবে আমরা এটাও বুঝি, এটি সহজ হবে না।”
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি সেই সময়সীমা কিছুটা মডারেট করে বলেন, এপ্রিল বা মে’র মধ্যে চুক্তির সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে।
তবে এই মুহূর্তে হোয়াইট হাউসে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির অভাবে কিছুটা হতাশা বিরাজ করছে—এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এখন দেখার বিষয়, রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি চুক্তি বাস্তবে কতটা এগোয়, না কি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই মধ্যস্থতার চেষ্টায় ইতি টানে।