চট্টগ্রামে দেশের ইতিহাসে প্রথম সাগরপথে চালু ফেরি সার্ভিস

New-Project-2025-03-24T122343.879.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

জীবিকার তাগিদে  অনেকেই ঢাকায় বসবাস করেন । ঈদে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখি মানুষ।  ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ’ যাত্রাপথে গানটা বারবার শুনছে অনেকেই। এবারের আনন্দকে আরো অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ রুটে সাগরপথে ফেরি সার্ভিস।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ রুটে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাগরপথে চালু হয়েছে ফেরি সার্ভিস। সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এই ফেরি সেবার উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৬ জন উপদেষ্টা।

তারা হলেন- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘আমরা সম্ভাবনাময় একটি স্বপ্নপূরণের প্রহর গুনছি। ফেরি চলাচলের মধ্য দিয়ে সন্দ্বীরে মানুষের যাতায়াতের একদিকে যেমন দুঃখ-দুর্দশা ঘুচবে, অন্যদিকে খুলবে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। এই অঞ্চলে স্থল বাণিজ্যসহ নৌবাণিজ্যের অপার সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। কৃষি, মৎস্যসহ স্বাস্থ্য খাতে আসবে নতুন গতি। এ ছাড়া পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে সাজানো যাবে দ্বীপের সমুদ্র উপকূল’। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করে। দৈনন্দিন কাজ, জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো জরুরি কাজে এই জনপদের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিমি উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে জেলা শহর চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

এই পথ পাড়ি দিতে শিশু, নারী ও বয়োবৃদ্ধ যাত্রীরা নৌযাত্রায় প্রতিনিয়ত অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে। কখনো একবুক, কখনো বা কোমরপানি, আবার কখনো হাঁটু পরিমাণ কাদা মাড়িয়ে কূলে উঠতে হয়। সূর্য ডোবার পর বন্ধ হয়ে যায় মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সব যোগাযোগ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তত্ত্বাবধানে চালু হওয়া ফেরিতে চলাচলের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে- সাধারণ যাত্রী ১০০ টাকা, মোটরসাইকেল ২০০ টাকা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ৫০০ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ি ৯০০ টাকা, বাস ৩ হাজার ৩০০ টাকা, ট্রাক ৩ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ১০ চাকার গাড়ি ৭ হাজার ১০০ টাকা।

ফেরি এবং বিআরটিসি বাস সেবা উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

Leave a Reply

scroll to top