জাতিসংঘের ডেল্টা সামিটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করলেন নোবিপ্রবি অধ্যাপক আফসানা

New-Project-13-6.jpg

জাতিসংঘের ডেল্টা সামিটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করলেন নোবিপ্রবি অধ্যাপক আফসানা

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীবিধৌত বদ্বীপ সংরক্ষণের লক্ষ্যে জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী প্রথম ইউনাইটেড নেশন কনভেনশন ফর কনসারভিং রিভার ডেল্টাস (ইউএনসিসিআরডি) ডেল্টা সামিট ২০২৫ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফিশারিজ ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আফসানা পারভীন। সম্মেলনটি ১৭-২০ মার্চ থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (AIT) কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি) কনফারেন্স সেন্টারে ১৭ থেকে ২০ মার্চ আয়োজিত এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ১৪টি দেশের বিশিষ্ট গবেষক, শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রদূত অংশগ্রহণ করেন। ডেলটাস ইউনাইট টু সেভ আওয়ার ডেল্টাস প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতিসঙ্ঘে একটি হোয়াইট পেপার পেশ করা, যা কপ-২৮-এ অনুমোদিত ইউনাইটেড নেশন কনভেনশন ফর কনসারভিং রিভার ডেল্টাস বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নদীবিধৌত বদ্বীপ অঞ্চলের সংকট, সম্ভাবনা ও সমাধানের পথ খুঁজতে এই সম্মেলনে ১৪টি দেশের বিশিষ্ট গবেষক, শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রদূত এবং পরিবেশবিদরা অংশগ্রহণ করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও বাংলাদেশের উপকূলীয় বাস্তবতা সম্পর্কে তুলে ধরেন ড. আফসানা পারভীন। তার গবেষণার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় বদ্বীপ এলাকার জীবন-জীবিকার উপর প্রভাব তুলে ধরেন।সম্মেলনে ড. আফসানা পারভীন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ ও টিকে থাকার সংগ্রাম তুলে ধরেন। তিনি তার গবেষণার মাধ্যমে দেখান— সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও উপকূলীয় বন্যা কিভাবে স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকায় বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। নদীভাঙন, লবণাক্ততার বিস্তার এবং চাষাবাদযোগ্য জমি কমে যাওয়ার ফলে কৃষি ও মৎস্যখাতে কী ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা।

 

ড. আফসানা পারভীন বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বদ্বীপ অঞ্চলের জনগোষ্ঠী টিকে থাকার জন্য নানান অভিযোজন কৌশল গ্রহণ করছে, যা বিশ্বব্যাপী বদ্বীপ অঞ্চলের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। ড. আফসানা পারভীন তার বক্তব্যে খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) অর্জনের চ্যালেঞ্জ, স্থানীয় সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

 

 

তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মৎস্য ও কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে টেকসই ও বিজ্ঞানসম্মত কৌশল গ্রহণ করা জরুরি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একত্রিত উদ্যোগ গ্রহণ করা ছাড়া এ সংকট সমাধান সম্ভব নয়।

ড. আফসানা পারভীন বলেন, “দেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক মঞ্চে জলবায়ু পরিবর্তন ও উপকূলীয় জনগণের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পারা আমার জন্য গর্বের বিষয়। আমি চাই, নোবিপ্রবি বিশ্ব দরবারে আরও বেশি পরিচিত হোক এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সম্মেলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবো।”

জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলন বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য বদ্বীপ অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

scroll to top