পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সমুদয়কাঠী ইউনিয়নের মৈশানি গ্রামে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ননী গোপাল সরকার (৮৫) ও তার ছেলে শম্ভু সরকারকে (৪২) রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে নয়ন গাজী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নয়ন গাজী একই গ্রামের মৃত হাফিজুর রহমান গাজীর ছেলে।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলার সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৈশানি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহত দুজনের মধ্যে ছেলে শম্ভু সরকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. লিমা আক্তার বলেন, আহত শম্ভু সরকারের অবস্থা বেশ গুরুতর। তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড আঘাত রয়েছে।
ননী গোপাল সরকারের মেয়ে খুকু রানী দাস বলেন, নয়ন গাজী কয়েকদিন যাবত আমার বাবার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে, কিন্তু ভয়ে এ বিষয়টি সে গোপন রেখেছে। তাছাড়া আমাদের কাছে নগদ কোন টাকা পয়সা নেই বলে জোর করে জমি লিখে নেওয়ার জন্যেও চাপ সৃষ্টি করে আসছে। আজকে সকালেও একাধিকবার টাকা অথবা জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল, দিতে রাজি না হওয়ায় রড দিয়ে আমার ভাই শম্ভু সরকারের শরীরে এলোপাতারি ভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
চিকিৎসাধীন ননী গোপাল সরকার বলেন, আমি শেখেরহাট বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য কেনাকাটা করতে গিয়েছিলাম,এ সময় নয়ন গাজী আমার ছেলেকে পিটাচ্ছে শুনে আমি বাড়িতে আসলে আমাকেও সে বেদম পিটিয়েছে। আমি অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক,বৃদ্ধ জনিত কারণে এখন কোন কাজ করতে পারছি না। আমার কাছে দীর্ঘদিন ধরে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে,আমার কাছে নগদ কোন টাকা না থাকায় আমি দাবিকৃত চাঁদা দিতে পারিনি,আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নয়ন গাজী মুঠোফোনে বলেন, ননী গোপাল সরকারের সাথে আমার জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। আমি ঐ পরিবারের কাছে সাড়ে ৬১ শতাংশ জমি পাই। এ বিষয়ে কোর্টে মামলা চলমান। আজ সকালে ওই জমিতে গাছের ব্যাপারী নিয়ে গাছ বিক্রি করতে গেলে আমাকে তারা বাধা দেয়। এতে তাদের সাথে আমার ধস্তাধস্তি হয়।
রট দিয়ে পিটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রড দিয়ে পিটানো হয়নি। চিকন ধরনের কোন কঞ্চি দিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষার জন্য ২/১ টি আঘাত লাগতে পারে।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বনি আমিন বলেন,ঘটনাটি আমি শুনেছি, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।