সন্তানের জন্য দুধ কিনতে গিয়ে শহীদ হন শাহরিয়ার শুভ

New-Project-2025-02-28T121834.156.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ঢাকার রাজপথ উত্তাল।  ঠিক এ সময় ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুর এলাকায় সন্তানের জন্য দুধ কিনতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন চুয়াডাঙ্গার সন্তান প্রকৌশলী শাহরিয়ার শুভ।

কৃষক পরিবারের সন্তান প্রকৌশলী শাহরিয়ার শুভ (২৮) যশোরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে ডিপ্লোমা শেষে ঢাকায় একটি লিফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। শাহরিয়ার শুভ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র গ্রামের মণ্ডল পাড়ার কৃষক আবু সাঈদ ও চম্পা খাতুনের ছেলে। আবু সাঈদ দম্পতির তিন ছেলে ও এক মেয়ে। শুভ মেজো।

শহীদ শাহরিয়ার শুভর স্ত্রীর নাম রাজিয়া সুলতানা। তাদের ১৪ মাস বয়সী মোস্তাফিজ মুহিন নামে এক ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামী শুভ মারা যাওয়ার পর ছেলেকে নিয়ে রাজিয়া ঢাকাতে বসবাস করছেন। তিনি একটি অনলাইন কোম্পানিতে চাকরি করছেন।

শাহরিয়ারের বড় ভাই সাদ্দাম হোসেন ঢাকার একটি কনস্ট্রাকশন ফার্মে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। ছোট ভাই সিয়াম আলী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। একমাত্র বোন লিজা খাতুন গৃহিণী।

শাহরিয়ার শুভ ঢাকার মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় শুভ ছেলের জন্য দুধ কিনতে বের হন। পরে ঢাকার মিরপুর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন প্রকৌশলী শাহরিয়ার শুভ।

১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে শাহরিয়ার শুভ গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে  নীরবতা বিরাজ করছে। বাবা আবু সাঈদ ও মা চম্পা বেগম ছাড়া বাড়িতে আর কেউ নেই।  একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে মারা যাওয়ার ৭ মাস অতিবাহিত হলেও আজও স্বাভাবিক হতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। শুভর মা চম্পা বলেন, আমাদের সাজানো সংসার উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে।

আবু সাইদ বলেন,বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা করলেও ‘আর্থিক সহযোগিতার থেকেও এখন জরুরি আমার দুই ছেলে ও শুভর স্ত্রীর একটি সরকারি চাকুরির ব্যবস্থা করা। সেই জন্য আমি বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক বলেন, ‘শুভকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি ও সামাজিকভাবে মর্যাদা দিতে হবে। অর্থনৈতিক সাপোর্ট নিশ্চিত করতে হবে। শুভর স্মৃতি রক্ষার্থে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে।’

Leave a Reply

scroll to top