সুন্দরবনে মহাবিপন্ন কচ্ছপ ‘বাটাগুর বাসকা’র ৬৫ বাচ্চার জন্ম

New-Project-19.jpg

'বাটাগুর বাসকা'র ৬৫ বাচ্চার জন্ম

বাগেরহাট প্রতিনিধি

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে মহাবিপন্ন কচ্ছপ প্রজাতি ‘বাটাগুর বাসকা’র ডিম থেকে ৬৫টি বাচ্চা ফুটে জন্ম নিয়েছে। সোমবার (৫ মে) সকালে ডিমগুলো থেকে বাচ্চাগুলো বের হলে, সেগুলোকে তুলে নিয়ে কেন্দ্রের সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়।

প্রজনন প্রক্রিয়া ও সাফল্য

করমজল প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি কচ্ছপ ৮২টি ডিম দেয়। সেগুলো সংগ্রহ করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে বালুর মধ্যে রাখা হয়। অবশেষে কেন্দ্রের পুকুরপাড়ের স্যান্ডবিচে রাখা ডিমগুলো থেকে সোমবার সকালে ৬৫টি বাচ্চা জন্ম নেয়।

সংরক্ষণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বর্তমানে বাচ্চাগুলোকে লালন-পালনের জন্য সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এগুলো বড় পুকুরে ছাড়া হবে এবং কিছু বাচ্চা প্রকৃতিতেও অবমুক্ত করা হবে।

পূর্ববর্তী সাফল্য ও প্রজনন কার্যক্রম

উল্লেখ্য, করমজলে ২০১৪ সালে এই মহাবিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয় মাত্র ৮টি কচ্ছপ দিয়ে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ৫২১টি ডিম থেকে ৪৭৫টি বাচ্চা ফুটে বের হয়েছে। বর্তমানে প্রজনন কেন্দ্রে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫৮টি কচ্ছপ রয়েছে। বংশবিস্তার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে শতাধিক কচ্ছপ সুন্দরবন ও সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে।

প্রজাতির গুরুত্ব ও সংরক্ষণ প্রয়োজনীয়তা

বাটাগুর বাসকা (Batagur baska) কচ্ছপ প্রজাতিটি আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা (IUCN) কর্তৃক মহাবিপন্ন তালিকাভুক্ত। প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংস, জলদূষণ এবং অবৈধ শিকার এই প্রজাতির অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। করমজল প্রজনন কেন্দ্রের এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে মহাবিপন্ন প্রজাতির সংরক্ষণ সম্ভব।

এই সাফল্য পরিবেশবিদ, গবেষক এবং প্রকৃতি সংরক্ষণে আগ্রহী সকলের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। এটি প্রমাণ করে যে, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব।

Leave a Reply

scroll to top