পবিত্র ঈদুল আজহার উৎসবে পশু কেনা ও কোরবানি দিতে গিয়ে অসাবধানতাবশত আহত হয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৪১ জন। এদের মধ্যে ১৮১ জনের জরুরি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত নিটোরে ঈদের আগের দিন ও ঈদের দিন এই বিপুল সংখ্যক রোগী এসেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে ২০৭ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন, বাকি ৪৩৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
নিটোরের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের আগের দিন পশু কেনার সময় পশুর লাথিতে এবং ঈদের দিন পশু কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হয়ে মোট ৬৪১ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের মধ্যে ১৮১ জনের জরুরি অস্ত্রোপচার (অপারেশন) করা হয়েছে।
আজ রোববার (৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও সকাল থেকে কোরবানি দিতে গিয়ে আহত রোগীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে নিটোরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আনুমানিক ৭০ থেকে ৮০ জন কোরবানি দিতে গিয়ে আহত রোগী এসেছেন।
নিটোরের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কনসালট্যান্ট ডা. রিপন ঘোষ গণমাধ্যমকে জানান, ঈদের দিন কোরবানি ঘিরে সারাদিনে হাত-পা ভাঙা ও কাটা-ছেঁড়া রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩২৫ জন। তাদের মধ্যে ১০২ জনের জরুরি অপারেশন লেগেছে এবং অপারেশনের পর তাদের সবাইকে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, ঈদের আগের দিন পশু কিনতে গিয়ে পশুর লাথিতে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩১৬ জন। তাদের মধ্যে ৭৯ জনের জরুরি অপারেশন লেগেছে এবং ৮৫ জনকে ভর্তি হতে হয়েছে।
ডা. রিপন ঘোষ ব্যাখ্যা করেন, “ঈদের দিন যেসব রোগী এসেছেন তাদের বেশিরভাগ পশু কোরবানি করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। কারও হাত কেটে গেছে, কারও পা কেটে গেছে, কারও রগ কেটে গেছে। ঈদের আগের দিন যারা এসেছেন তাদের বেশিরভাগ কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে পশুর লাথিতে হাত-পা ভেঙেছে। যাদের অপারেশন লাগেনি এবং গুরুতর আহত না তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।”
নিটোরে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত আনসার সদস্য হাবিব জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিনও সকাল থেকে একের পর এক রোগী আসছেন। দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন এবং দিনের বাকি সময়েও আরও অনেকেই আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বিপুল সংখ্যক আহত মানুষের আগমন ঈদের আনন্দকে কিছুটা বিষাদময় করে তুলেছে।