ঢাকার মেরুল বাড্ডায় ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৫৭ জন শিক্ষককে ‘গুণগত জার্নাল প্রকাশনা পুরস্কার ২০২৫’ প্রদান করা হয়েছে। উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন গবেষণার জন্য টানা দ্বিতীয় বর্ষে এই স্বীকৃতি দিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।
পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষকরা মোট ১৪৫টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ৭৪টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে স্কোপাস ডেটাবেজের শীর্ষ ১০% কিউ১ জার্নালে এবং ৭১টি গবেষণা শীর্ষ ১৫% কিউ১ জার্নালে স্থান পেয়েছে। স্কোপাস একটি বহুশাস্ত্রীয় ডেটাবেজ, যেখানে পিয়ার-রিভিউ জার্নাল, সম্মেলন সাহিত্য ও পেটেন্ট রেকর্ড অন্তর্ভুক্ত হয়। কিউ১ জার্নালগুলো গবেষণার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রভাবযুক্ত হিসেবে স্বীকৃত।
এই গবেষণাগুলোতে সমকালীন বিভিন্ন ইস্যু যেমন ব্যবসায়ের সহজীকরণ, মানসিক স্বাস্থ্য, উদীয়মান রোগ, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি ও জলবায়ু, ভাষার বিবর্তন এবং আইসিটি খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয় উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, “জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন ও গবেষণাভিত্তিক উদ্ভাবনে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা সরকারের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।”
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফরহাত আনোয়ার বলেন, “ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মূল লক্ষ্য হলো মানব উন্নয়ন। গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বে আমরা বিশ্বের জটিল সমস্যা সমাধানে গবেষণার মাধ্যমে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
গবেষণার প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করে তিনি জানান, গার্মেন্টস খাত নিয়ে গবেষণা বৈশ্বিক বাণিজ্যে প্রভাব রাখছে, ভ্যাকসিন কোল্ড চেইনের ধারণা খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে তরুণদের অংশগ্রহণমূলক গবেষণা চলমান রয়েছে এবং উঁচু সড়ক অবকাঠামো ব্যবহারে উদ্ভাবনী সমাধান মেগাসিটিগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইসিডিডিআরবির সিনিয়র বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান।
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌশলগত স্তম্ভ ‘গবেষণার মাধ্যমে প্রভাব’ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্ঞানচর্চাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। শিক্ষকদের এই স্বীকৃতি বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা সংস্কৃতির নতুন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।