এবারের ঈদুল আজহায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় মোট ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৮০টি পশু কোরবানি হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় কোরবানির সংখ্যা কম হলেও, উৎপন্ন বর্জ্যের পরিমাণ বেড়েছে। আজ সোমবার (৯ জুন) গুলশানের নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এই তথ্য জানান।
মোহাম্মদ এজাজ বিস্তারিত তথ্য দিয়ে বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় এবার ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৭টি গরু, ১ লাখ ৫৪৬টি ছাগল, ১ হাজার ৭৬২টি মহিষ এবং ৪ হাজার ৫৭টি ভেড়া কোরবানি করা হয়েছে। তবে কোনো উট কোরবানি হয়নি।
বর্জ্য অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমরা প্রথম দিন অনুমান করেছিলাম এবার প্রায় ২০ হাজার টন ময়লা উৎপন্ন হবে। আজ সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত আমরা ২০ হাজার ৮৮৯ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করেছি।” প্রাথমিকভাবে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সমাপ্তি ঘোষণা করার কথা থাকলেও, ডিএনসিসি এই কার্যক্রম চলমান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোরবানির পর ঢাকায় মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়া এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিএনসিসি প্রশাসক মশা নিয়ন্ত্রণে তাদের নেওয়া পদক্ষেপের কথা জানান। তিনি বলেন, “ডেঙ্গুর ক্যাম্পেইন ছাড়াও আপনারা যদি লক্ষ্য করেন দেখবেন, গত তিন দিন সকালে মশার ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি বিকেলেও মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।” বৃষ্টির কারণে দিনে দু’বার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে এবং মাইকিংও পুনরায় শুরু করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, “এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৃষ্টি হলে বাসায় পানি জমবে। রাস্তায় আমরা দিচ্ছি। বাসায় যখন পানি জমবে, ফ্রিজের নিচে পানি জমবে, রান্না ঘরের বেসিং ও কেবিনেটের নিচে পানি জমবে, ছাদের ওপরে পানি জমবে, গ্যারেজে যে গাড়ি ধুয়েছেন সেখানে এখন গাড়ি না ধুলেও পানিগুলো জমে থাকবে দুই-তিনদিন।”
এসময় তিনি নগরবাসীকে বিশেষ করে যারা ঈদের ছুটিতে দেশের বাড়ি গেছেন, তাদের বাসার দারোয়ানের মাধ্যমে সপ্তাহে দু’দিন বাসা পরিষ্কার করানোর আহ্বান জানান, যাতে কোথাও পানি জমে না থাকে। তিনি এটিকে একটি পাবলিক ক্রাইসিস হিসেবে উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক থাকার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, কোরবানি দিতে গিয়ে গত তিন দিনে ৯৪২ জন আহত হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া খোলা আকাশের নিচে চামড়া লবণজাত করার কারণে দুর্গন্ধ ছড়ানোর ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।