ঈদযাত্রার শেষ মুহূর্তেও চরম ভোগান্তিতে উত্তরবঙ্গের ঘরমুখো মানুষ। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যা ছোট শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী যাত্রীদের জন্য সীমাহীন কষ্ট বয়ে আনছে। প্রচণ্ড গরম ও অস্বস্তি উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে এবং খোলা ট্রাক-পিকআপে করে গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন অসংখ্য মানুষ।
আজ শুক্রবার (৬ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে মহাসড়কের সেতু এলাকা থেকে করটিয়া করাতিপাড়া বাইপাস পর্যন্ত এই বিশাল যানজটের চিত্র দেখা গেছে। গত বুধবার (৪ জুন) ভোর ৪টা থেকে শুরু হওয়া এই যানজট শুক্রবার দুপুর পর্যন্তও অব্যাহত রয়েছে।
অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, সেতুর ওপর গাড়ি বিকল হওয়া এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনা যানজটের প্রধান কারণ। এলেঙ্গা বাস স্টেশন, রাবনা বাইপাস, আশেকপুর বাইপাস এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে মানুষের ঢল নেমেছে। যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি ট্রাক, পিকআপ, লোকাল বাস, এমনকি লেগুনাতেও গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের চেয়ে ট্রাক ও পিকআপের সংখ্যাই বেশি চোখে পড়ছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করছেন, দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগছে। গণপরিবহন সংকট এবং অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক-পিকআপ ও বাসের ছাদে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
যমুনা সেতুর ধারণক্ষমতা কম থাকায় উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী গাড়িগুলো ভূঞাপুর দিয়ে ঘুরিয়ে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরীফ জানান, মহাসড়কে বেশ কয়েকটি বাস বিকল হয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে যানজট নিরসনে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অল্প সময়ের মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “যানজট নিরসনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।”
তবে ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের এই দীর্ঘ ভোগান্তি কবে শেষ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।