দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও উদ্বেগজনক মোড় নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (১৫ জুন সকাল ৮টা থেকে ১৬ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ২৩৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে স্বস্তির খবর হলো, এই সময়ে ডেঙ্গুতে নতুন করে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। আজ সোমবার (১৬ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন ভর্তি হওয়া ২৩৪ জন রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ ১১৯ জনই বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা, যা সেখানকার পরিস্থিতিকে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক করে তুলেছে। এছাড়া, রাজধানী ঢাকায় ৭৫ জন এবং চট্টগ্রামে ২৯ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। অন্যান্য বিভাগের মধ্যে খুলনায় ৫ জন, ময়মনসিংহে ১ জন এবং রাজশাহীতে ৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার (১৫ জুন) ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪৯ জন। সোমবারের (১৬ জুন) প্রতিবেদনে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ১৩৪ জন পুরুষ এবং ১০০ জন নারী রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬ হাজার ২২২ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ২ হাজার ৯ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ২১৩ জন। এই বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সাল ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুর সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। সেই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০৫ জন। এর আগের বছর, ২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২৮১ জনের।
করোনা মহামারির সময়, ২০২০ সালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কিছুটা কম দেখা গেলেও, ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য জনসাধারণকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোকে মশক নিধন কার্যক্রমে আরও গতিশীল হতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে গত বছরের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।