২৪ ঘণ্টায় করোনায় নিহত ২, শনাক্ত ১৫

New-Project-2025-06-13T190758.616.png
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি আবারও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং নতুন করে ১৫ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে মোট ১৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা শনাক্তের হার ৮.৬২ শতাংশ নির্দেশ করে। এই হার সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চগুলোর একটি, যা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। একই সময়ে, ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন মাত্র ৩ জন, যা সুস্থতার হারের তুলনায় নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বেশি হওয়ায় উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষার সংখ্যা কম হলেও শনাক্তের হার বেশি হওয়াটা কমিউনিটিতে ভাইরাসের সক্রিয় উপস্থিতির প্রমাণ। এর অর্থ হলো, সমাজের মধ্যে ভাইরাসটি নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে এবং আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করছে, যা ভবিষ্যতে সংক্রমণের বড় ঢেউ সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় যে দুইজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের দুজনেই নারী। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে এবং অপরজনের বয়স ৭১-৮০ বছরের মধ্যে। এই মৃত্যুগুলো দেশের দুটি ভিন্ন বিভাগ থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে; একজন ঢাকা বিভাগের এবং অন্যজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এছাড়া, মৃতদের মধ্যে একজন সরকারি হাসপাতালে এবং অন্যজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অল্পবয়সী একজন নারীর মৃত্যু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ এটি প্রমাণ করে যে, কেবল বয়স্করাই নন, তরুণরাও এই ভাইরাসের শিকার হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট ২৯ হাজার ৫০২ জন মারা গেছেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এই ভাইরাস ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে। বর্তমানে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮০০ জনে।

যদিও গত কয়েক মাস ধরে সংক্রমণ কিছুটা কমে এসেছিল, সাম্প্রতিক উপাত্তগুলো আবারও সতর্কতা জারি করছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন। বিশেষ করে জনসমাগমস্থলে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

সরকার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যদি সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে, তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে বলে জানানো হয়েছে। নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানোর জন্য এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য।

Leave a Reply

scroll to top