সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র ও ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্র সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ। বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী।
সংবাদ সম্মেলনে শরীফ হাদী বলেন, “আজকের দিনে আমাদের কারো প্রতি কোনো দায় নেই, কোনো দরদ নেই। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দশ মাস পার হয়েছে, অথচ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে তারা রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে পরিবারের সদস্যসহ রাতের আঁধারে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিয়েছে। এটা যদি ষড়যন্ত্র না হয়, তাহলে কী?”
তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা জানতে চাই—রাষ্ট্রপতিকে ছাড় দেওয়ার নির্দেশ এয়ারপোর্টে কে দিয়েছিল? রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে কার ফোন গিয়েছিল? যদি সেই নাম প্রকাশ না করা হয়, এর দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নিতে হবে।”
ছাত্র উপদেষ্টাদের উদ্দেশে হাদী বলেন, “আপনারা কিসের ছাত্র উপদেষ্টা? ছাত্রদের কোনো দাবিই তো এই সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাতে পারেননি। বরং আপনাদের থাকার কারণেই অন্য উপদেষ্টারা মুখে বলছে ছাত্রসমাজ সরকারের সঙ্গে আছে। আমরা বলছি, যদি সৎ সাহস থাকে, তাহলে এখনই পদত্যাগ করুন।”
এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনারা না পারলেন রাষ্ট্রপতি অপসারণ করতে, না পারলেন জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে, না পারলেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে। তাহলে আপনারা আসলে করেনটা কী?”
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে হাদী বলেন, “বিদেশ থেকে নানান কাজে এক্সপার্ট এনে ফেলেছেন, অথচ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা কিংবা জুলাই গণহত্যার বিচার করার জন্য একজন আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞও আনেননি। ট্রাইবুনাল গঠন করেছেন বটে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি ধ্বংসপ্রায়—ধ্বজভঙ্গ অবস্থা।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনারা উন্নয়নের কথা বলেন। কিন্তু উন্নয়ন করে কেউ যদি জনতার রোষ থেকে বাঁচতে পারতো, তাহলে খুনি হাসিনার পালানোর দরকার পড়ত না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। যদি জনগণের সঙ্গে না থাকেন, আপনাদেরও গাদ্দার হিসেবে চিহ্নিত হতে হবে।”
শেষে তিনি বলেন, “আপনারা এখনো সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নিন। আমরা দোয়া করি, আপনাদের যেন জুলাই গণহত্যার রক্তে লেপ্ত হওয়ার দায় নিতে না হয়। আল্লাহ আপনাদের হেদায়েত দিন।”