সেহরির সময় গাজায় ব্যাপক হামলা, নিহত প্রায় তিন শতাধিক

New-Project-2025-03-18T122942.654.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নির্বিচারে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় প্রায় তিন শতাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা হামাসের ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুগুলোতে’ হামলা করেছে। গাজার উচ্চপদস্থ হামাস কর্মকর্তার মধ্যে মাহমুদ আবু ওয়াফাহ হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে বিরতির পর গাজায় এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজায় হামলা শুরুর আগে বেশিরভাগ মানুষ রমজানের সেহরি খাচ্ছিলেন, তখনই বিস্ফোরণ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ২০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার আকাশে উড়ছিল এবং সেগুলো গাজা সিটি, রাফাহ ও খান ইউনিসে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরুর আলাপ ব্যর্থ হওয়ার পরই হামলা শুরু করা হয়েছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, ‘হামাস যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জিম্মিদের ফেরত দিতে বারবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সে কারণেই আবার হামলা শুরু করা হলো।’

এদিকে হামাস এ হামলাকে একটি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, ইসরায়েল তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং এখন বন্দি ইসরায়েলি সেনাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়তে পারে।

বিমান হামলা শুরুর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরায়েলকে হামলা চালানোর পরামর্শ দিয়েছিল। ওয়াশিংটন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরুর পরিকল্পনা নেতানিয়াহু অনেক আগেই করে রেখেছিলেন। শুধু ভালো একটা সুযোগের অপেক্ষা করছিলেন। প্রথমত নিজের রাজনৈতিক স্বার্থের জন্যই এখন যুদ্ধ টিকিয়ে রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য। তাছাড়া, ফিলিস্তিনে দখলদারি প্রতিষ্ঠার পুরোনো খায়েশ তো রয়েছেই। এরই মধ্যে ইসরায়েলের নতুন আর্মি চিফ বলেছেন, ‘২০২৫ সাল হতে যাচ্ছে যুদ্ধের বছর’।

এদিকে, গাজার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছে। ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ বেসামরিক নাগরিক। গাজার প্রায় ২১ লাখ মানুষ বেশিরভাগই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং শহরের ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, গাজার স্বাস্থ্য, পানি, ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে এবং খাদ্য, জ্বালানি, ও ওষুধের সংকট তীব্র হয়েছে। তথ্য: বিবিসি, আলজাজিরা

Leave a Reply

scroll to top